রাজধানীর পাইকপাড়ার আহমেদনগরে জুলিয়েট মণ্ডল (২২) নামের এক নার্সের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। জুলিয়েট মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

গতকাল বুধবার বাসা থেকে তাঁকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হোসনে আরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জুলিয়েটের ছোট বোন স্নিগ্ধা মণ্ডলের অভিযোগ, জুলিয়েটকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তারপর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

অপরদিকে জুলিয়েটের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, জুলিয়েট সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জুলিয়েট মণ্ডলের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নলচিরা গ্রামে। জুলিয়েটের বাবার নাম সুবল মণ্ডল। সে রাজধানীতে একটি হাসপাতালে স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

বোন স্নিগ্ধা মণ্ডল জানান, দুই বছর আগে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার রামশীল গ্রামের বাসিন্দা নিক্সন তালুকদারের সঙ্গে বিয়ে হয় জুলিয়েটের। এরপর জুলিয়েট তাঁর শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে পাইকপাড়ার আহমেদনগরে থাকতেন। তাঁর স্বামী নিক্সন তালুকদার আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেন।

স্নিগ্ধা মণ্ডল বলেন, ‘জুলিয়েট মণ্ডল মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বেতনের টাকা না দেওয়ায় তাঁর স্বামী নিক্সন ও শাশুড়ি মিলে বিভিন্ন অজুহাতে জুলিয়েটকে নির্যাতন করছিলেন। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন জুলিয়েটকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।’

মিরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হোসনে আরা বলেন, গতকাল বুধবার সকালে জুলিয়েটকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে যান। সেখানের চিকিৎসকেরা জুলিয়েটকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

জুলিয়েট মণ্ডলের পরিবারের বরাত দিয়ে হোসনে আরা বলেন, জুলিয়েটের শাশুড়ি জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তৈরিতে শাশুড়ি প্রভাব বিস্তার করতে পারেন, জুলিয়েটের পরিবারের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে জুলিয়েটের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।