তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমাধি সলিলে ভেসে গেছে : আবদুর রহমান
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমাধি সলিলে ভেসে গেছে। যে সরকারের ধারণা বাংলার মানুষের মন থেকে মুছে গেছে সে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাংলার মাঠিতে আর কখনোই হবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসিম উদ্দীন হল মাঠে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ‘চিরবিস্ময় বঙ্গবন্ধু’ নামে গ্রাফিতি উদ্বোধন উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগ।
আবদুর রহমান বলেন, ‘২০২৩ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে, তত্ত্ববধায়ক সরকার ছাড়া তারা এই নির্বাচন হতে দেবে না। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে। যদি ইচ্ছে করে সেই নির্বাচনে আপনারা (বিএনপি) নাও আসতে পারেন। আমাদের কোনো আফসোস নেই। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে। আর সেই নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধান থাকবেন প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। এর বাইরে সংবিধানে আর কোনো প্রবিধান নেই। সুতরাং নির্বাচনে আসলে আপনাদের অভিনন্দন জানাবো। আর না আসলে আমাদের আফসোস থাকবে না।
আবদুর রহমান আরও বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করার নামে যদি আবার নতুন করে জ্বালাও পোড়াও কর্মসূচি আসে তাহলে ছাত্রলীগ বসে থাকবে না। তোমাদের দাঁত ভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য এই ছাত্রলীগ প্রস্তুত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের উপর যে আস্থা রাখেন অন্য কোনো সহযোগী সংগঠনের উপর তিনি সেই আস্থা পান না। বিএনপির এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য বহু সহযোগী সংগঠন আছে। কিন্তু প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ছাত্রলীগের উপর যে ভরসা বা আস্থা রাখেন, অন্য কোনো সহযোগী সংগঠনের উপর তিনি সেই আস্থা পান না বা রাখেন না।’
আওয়ামী লীগের এই প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, ‘যেই দলের সভাপতি আছে কিন্তু সাধারণ সম্পাদক নেই সেই দলের নেতাও শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন। এমন অনেক নেতা আছে যাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী না দিয়ে তিনি যদি একাও নির্বাচন করেন তাহলেও তিনি জিততে পারবেন না। এমন নেতাও শেখ হাসিনার সমালোচনা করেন। তারা বলেন, শেখ হাসিনা করোনা মোকাবেলায় এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ওদেরকে আমরা বলি, শেখ হাসিনা যদি এই দেশের প্রধানমন্ত্রী না থাকতেন তাহলে এই দেশ করোনকালীন মহামারিতে কেয়ামত হয়ে যেত। কেউ এই দেশকে রক্ষা করতে পারত না। শেখ হাসিনা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। আপনারা সরু চাল খান। মোটা চালের ভাত আপনাদের পছন্দ হয় না। মোটা চাল এখনও ৪০ টাকা। আর সরু চালের দাম দেড় মাস আগে কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এরপর এই চালেও মূল্য আর এক টাকাও বৃদ্ধি পায়নি।’
বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় বঙ্গবন্ধু হলে আঁকা ‘চিরবিষ্ময় বঙ্গবন্ধু’ গ্রাফিতি উদ্বোধন করেন। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, বঙ্গবন্ধু হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আকরাম হোসেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন প্রমুখ। বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্তের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হলের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান।
আলোচনা সভা শেষে হল মাঠে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে। এতে দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুট এবং আভাস গান পরিবেশন করবে।