প্রতিদিন এক কাপ টক দই খান, দেখুন ম্যাজিক
দই আমাদের প্রায় সবার পছন্দের খাবার। দইয়ে রয়েছে নানান পুষ্টিগুণ। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে দইয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে দইয়ের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বলেছেন পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা।
পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা বলেন, দই খুব জনপ্রিয় একটি ফার্মেন্টেড মিল্ক প্রডাক্ট। দইকে আমরা সাধারণত আমাদের মেইন মিলের সাথে, ডেজার্ট হিসেবে অথবা স্ন্যাকস হিসেবেও খেয়ে থাকি। দই শুধু যে আমাদের হজমে সহায়তা করে, তা নয়। এটি আমাদের ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা, হাড়ের সমস্যা এবং ছত্রাকের সংক্রমণজনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। দই অনেক উপকারী একটি খাবার।
নুসরাত জাহান দীপা বলেন, দই হচ্ছে প্রোটিনের উৎকৃষ্ট একটি উৎস। একে আমরা চাইলে লো ফ্যাট বা ফ্যাট ফ্রি করেও খেতে পারি। দইয়ের মধ্যে ল্যাকটোজ নামে সামান্য পরিমাণে ন্যাচারাল মিল্ক সুগার থাকে, বাড়তি চিনি যোগ করেও এর ক্যালোরির পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। তবে এই ধরনের দই ছোট বাচ্চা বা যারা ওজন বাড়াতে চায়, তাদের জন্য মিষ্টি দই অনেক বেশি উপকারী। যারা কার্ডিয়াক পেশেন্ট, ডায়াবেটিক পেশেন্ট অথবা যারা ওজন কমাতে চায়, তাদের অবশ্যই টক দই অথবা কম মিষ্টির দই খেতে হবে।
পুষ্টিবিদ নুসরাত জাহান দীপা বলেন, দই যেহেতু একটি ফার্মেন্টেড মিল্ক প্রডাক্ট, এতে প্রো-বায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই প্রো-বায়োটিক ব্যাকটেরিয়া আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে বাড়াতে সহায়তা করে, আমাদের কোলেস্টেরল কমায় এবং আমাদের দেহে যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে, সেগুলোকে শোষণে সহায়তা করে থাকে। এ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের কারণে যে ডায়রিয়া হয়ে থাকে, এই দই এ ধরনের ডায়রিয়াকে প্রতিরোধ করতে খুব ভালোভাবে সহায়তা করে।
দীপা যুক্ত করেন, যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা এই দই খেতে পারে। যারা আইবিএসের রোগী বা ইরিটেবল বাউল সিনড্রোম যাদের রয়েছে অথবা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স যাদের রয়েছে, তারা যদি দই খায়, তাদের খুব সহজেই ল্যাকটোজের ডাইজেশন হতে পারে। হাড়ের বিভিন্ন ক্ষয়রোগজনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে দই খুব ভালো একটি পথ্য। কারণ, এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। এ ছাড়া যাদের অস্বাভাবিক হাই ব্লাড প্রেশার রয়েছে অথবা যাদের হাইপারটেনশন পেশেন্ট বলা হয়, তারাও চাইলে দই খেতে পারে। কেননা দই ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ করে এবং এরা চাইলে প্রতিদিনই টক দই অথবা কম মিষ্টির দই খেতে পারে।
নুসরাত জাহান দীপা আরও বলেন, যারা দীর্ঘদিন জন্ডিসের সমস্যায় ভুগছে অথবা যারা হেপাটাইটিসের পেশেন্ট, তাদের জন্য দই খুব ভালো একটি খাবার। যারা ঘুমের সমস্যায় ভুগছে, তারা দই খেলে এ সমস্যা দূর হতে পারে। সুতরাং একজন সুস্থ মানুষ হিসেবে আমাদের প্রতিদিনই এক কাপ করে দই খাওয়া উচিত, যা থেকে আমরা কিছুটা হলেও ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারব।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।