মেসেঞ্জারে ‘সরকারবিরোধী বক্তব্য’, ১২ ঘণ্টা থানায় ঢাবি শিক্ষার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মেসেঞ্জার গ্রুপের কথোপকথনকে সরকারবিরোধী কাজ ও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিফতাহুল মারুফকে থানায় দিয়েছেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন।
প্রক্টর অফিসের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাত ১২টায় ওই শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করা হয়। সাময়িক তদন্তের পর মুচলেকা নিয়ে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ওই শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৪তম ব্যাচের অফিশিয়াল নোটিশ গ্রুপে (মেসেঞ্জার) একটি মন্তব্য লিখে মেসেজ দেন মারুফ। তিনি সেখানে লেখেন, ‘সিরিজ বোমা হামলা চালাইছে (চালিয়েছে) জামায়াতুল মুজাহিদিন নামে একটা জঙ্গি সংগঠন, বাংলা ভাইয়ের নেতৃত্বে। সেই সময় ক্ষমতায় ছিল বিএনপি-জামায়াত। এই ক্ষমতায় থাকার জন্য যদি দায়ী তারা হয়, তাহলে ২০০৮-বর্তমানে গুলশানসহ সব জঙ্গি হামলার জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ।’
তাঁর সেই মন্তব্যের স্ক্রিনশট নিয়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হোসেন শান্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এরপর মোবাইল ফোন চেক করে হল প্রভোস্টের হাতে তুলে দেন তিনি। পরে প্রক্টরিয়াল টিম শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে মারুফকে।
ওই ব্যাচের এক শিক্ষার্থী এনটিভি অনলাইনকে বলে, ‘মাঝে মধ্যেই মেসেঞ্জার গ্রুপে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক হয়। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে এগুলোর চর্চা করি আমরা। কিন্তু মারুফের ওই বক্তব্যের মধ্যে সন্দেহজনক কী থাকতে পারে, সেটা বোধগম্য নয়।’
শুক্রবার দুপুরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা তাঁর এলাকায় খোঁজ নিয়েছি। তাঁর (মারুফ) পরিবারের বড় দুই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে৷ তবে, ব্যক্তিগতভাবে তাঁর কোনো দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা নেই। সে যে মন্তব্য করেছে এটা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তাই আমরা তদন্তের পরে তাঁকে একটি মুচলেকা দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষকদের জিম্মায় ছেড়ে দিয়েছি।’
মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমাদের হল থেকে প্রাথমিক তদন্ত করে মারুফের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিমের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। এরপর প্রক্টরিয়াল টিম থানায় দিয়েছে। কোনো ছাত্রকে সরাসরি আমি থানায় দিতে পারি না, এটা আমাদের সিস্টেমে নেই। সে আমাদের ছাত্র হিসেবে সহযোগিতা করে কথা বলেনি। এজন্য প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে আমার কাছে যতটুকু এভিডেন্স ছিল, তার ভিত্তিতেই থানায় দিতে বাধ্য হয়েছি।’