শিশুর মস্তিষ্ক বিকাশে গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাবার
সুস্থ-সবল সন্তান সব মা-বাবারই কাম্য। সে জন্য গর্ভাবস্থা হতে হয় পরিকল্পিত। আজ আমরা একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাবার সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ম্যাক্সিমাম গর্ভই কিন্তু অপরিকল্পিত থাকে। সে ক্ষেত্রে মাকে যেটা করতে হবে, তিনি যখন থেকে জানবেন যে উনি প্রেগন্যান্ট, তখন থেকেই কিন্তু তাঁর খাবারদাবারের তালিকাটা খুব সচেতনভাবে নির্বাচন করতে হবে। কারণ, তাঁর খাবারের ওপরই নির্ভর করে গর্ভস্থ শিশু কতটুকু সুস্থ-সবলভাবে পৃথিবীতে আসবে।
পুষ্টিবিদ ইশরাত জাহান বলেন, গর্ভাবস্থায় ৭০ ভাগ ব্রেইন ডেভেলপমেন্ট হয়ে যায়। এর জন্য গর্ভাবস্থায় খাবারদাবার যদি ঠিকমতো না হয়, তাহলে সেই শিশুর ব্রেইনের যে সিচুয়েশন, সেটার জন্য অনেকটাই দায়ী থাকেন মা। গর্ভাবস্থাকে আমরা তিনটা ট্রাইমেস্টারে ভাগ করি। প্রথম ট্রাইমেস্টার মানে প্রথম তিন মাস। পরের ট্রাইমেস্টার মানে পরের তিন মাস এবং ডেলিভারির আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা তৃতীয় ট্রাইমেস্টার বলি। প্রত্যেক ট্রাইমেস্টারে খাবারের চাহিদা আলাদা। প্রথম তিন মাসে বাচ্চার কগনেটিভ যে চেঞ্জ, ব্রেইনের যে ডেভেলপমেন্ট, সেটা শুরু হয়। এ জন্য আমাদের ফোলেট এবং বি১২ খাবার খুব সচেতনভাবে নির্বাচন করতে হবে। এবং ডাক্তারের কাছে যদি কেউ নাও যেতে পারেন, একজন গর্ভবতী মা নিজে থেকেই এ ভিটামিন দুটো শুরু করে দিতে পারেন। পাশাপাশি সুষম খাবার খেতে হবে। অনেকের খাওয়ার প্রবলেম থাকতে পারে। অনেকের ভমিটিং টেন্ডেন্সি থাকে। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, ঘুম থেকে ওঠার পরে যাতে পানিজাতীয় বা তরলজাতীয় খাবার না খাওয়া হয়। কারণ, ওই সময় আমাদের বডির যে সিচুয়েশন থাকে, আপনি যখন লিকুইড খাবার খাবেন, তখন বমির প্রবণতা বেড়ে যায়। এ জন্য ঘুম থেকে ওঠার পর যদি চিড়া-মুড়ি-বিস্কিট বা এ জাতীয় শুকনো খাবার খাই এবং তার ১০-১৫ মিনিট পরে যদি পানি খাই, তাহলে বমির প্রবণতা অনেকটা কমে যায়।
এ পুষ্টিবিদ বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারে আমাদের ভালো খাবার নির্বাচন করতে হবে। পুরো সুষম খাবার খেতে না পারলেও এমন কিছু খাবার আমাদের খেতেই হবে যেগুলো থেকে দৈনন্দিন খাবারের ব্যাকআপ আসে। যেমন ডিম। ডিম হচ্ছে সুপারফুড। দুধ হচ্ছে সুপারফুড। এ খাবারগুলো খাদ্যতালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে, যাতে অন্যান্য খাবারে যদি ল্যাকিংসও থাকে, তাহলে এ ধরনের খাবার ব্যাকআপ দেবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি, ফ্রেশ ফ্রুটস; দেশীয় ফল খেতে বলি আমরা। অনেকের কার্বোহাইড্রেট খাবারের প্রতি একটু দুর্বলতা থাকে। এখন দেখা যাচ্ছে যে এই কার্বোহাইড্রেট বা মিষ্টিজাতীয় খাবারের ইমব্যালেন্সের কারণে অনেক গর্ভবতী মায়ের ওজন বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বেড়ে যায়, যেখানে শিশু মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
গর্ভাবস্থায় মায়ের সুষম খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপর্যুক্ত ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।