পাওয়ার ডেভেলপ কোম্পানি উচ্ছেদে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আওতাধীন পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড কোম্পানি উচ্ছেদ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা ও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এক মাসের মধ্যে বকেয়া পাওনা বাবদ দুই কোটি টাকা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে দিতে বলেছেন আদালত। পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড কোম্পানিকে এ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আজ বুধবার বিষয়টি জানানো হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু। তাঁকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মো. আসিফ ইকবাল ও ব্যারিস্টার সামিউল ইসলাম জুয়েল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারান্নুম মিতি।
গত ১০ অক্টোবর ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আওতাধীন পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েনের জন্য চিঠি ইস্যুর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। কোম্পানির এমডি এস এম রফিকের পক্ষে অ্যাডভোকেট আসিফ ইকবাল এ রিট দায়ের করেন।
ওই দিন আইনজীবী ব্যারিস্টার সামিউল ইসলাম জুয়েল বলেছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ১৯৯৫ সালে দুই একর জমি লিজ নেন পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম রফিক। লিজ নেওয়ার সময় দুটি শর্ত ছিল, তারা ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্যাস সংযোগ দেবে এবং সেখান থেকে মালামাল তারা সরিয়ে নেবে। চুক্তির শর্ত না মানায় ২০০১ সালে পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি সম্পাদন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০২ সালে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ লিজ বাতিল করে দেয়।
বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেওয়ানি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। পরে জজ কোর্ট চুক্তি কার্যকর করার জন্য নির্দেশনা দেন। জজকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট হাইকোর্টে আসে। হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট চলতি বছরের ৩ অক্টোবর একটি চিঠি ইস্যু করে পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ অক্টোবর পাওয়ার ডেভেলপ ও কনস্ট্রাকশন লিমিটেড উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েনের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়।
চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে পাওয়ার ডেভেলপ অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। রিট আবেদনে বলা হয়, নোটিশ না দিয়ে উচ্ছেদের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করতে পারে না।
রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গতকাল উচ্ছেদ কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। একইসঙ্গে একমাসের মধ্যে বকেয়া পাওনা বাবদ দুই কোটি টাকা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে দিতে বলেন আদালত।