ভাষাশহীদ রফিকের ৯৭তম জন্মদিন পালন
ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদের ৯৭তম জন্মদিন ছিল আজ রোববার। দিনটি স্মরণে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার পারিল গ্রামে। ‘ভাষা শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ চত্বরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ভাষাশহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার পারিল বলধারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুল লতিফ আর মায়ের নাম রাফিজা খাতুন। রফিক ছিলেন পাঁচ ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বড়।
১৯৪৯ সালে রফিক স্থানীয় বায়রা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করে মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্র কলেজের বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। তবে, পড়ালেখা শেষ না করে তিনি ঢাকায় বাবার মুদ্রণশিল্প ব্যবসায় যুক্ত হন। পরে তিনি ঢাকায় পুনরায় তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ, বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন।
ভাষাশহীদ রফিক ভাষার দাবিতে সোচ্চার ছিলেন এবং সক্রিয় একজন আন্দোলনকারী হিসেবে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৪৪ ধারা ভেঙে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গণে এলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে রফিকউদ্দিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে পুলিশ তার মৃতদেহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় এবং রাত ৩টায় সামরিক বাহিনীর পহারায় ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। ভাষা আন্দোলনে তার আত্মত্যাগের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকারে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে।
এ ছাড়া ভাষাশহীদ রফিকের গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রফিক নগর করা হয় এবং ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামে তার নামে ‘ভাষা শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভবনের নাম ‘ভাষাশহীদ রফিক ভবন’ করা হয়।
প্রথম ভাষা শহীদ রফিককে স্মরণ করতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান হান্নান, স্থানীয় বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মাজেদ খান, শহীদ রফিকের ছোট ভাই খোরশেদ আলমসহ আরও অনেকে।