যুবলীগের দখলে ঢাবি ক্যাম্পাস, ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা
আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীর মহাসমাবেশ চলছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এতে সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন। এসব নেতাকর্মীরা পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবাধ চলাচল, মিছিল, স্লোগান ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রেখেছে। এতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে বলে দাবি জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে, আবাসিক হলগুলোর ক্যান্টিন, দোকান ও ওয়াশরুমগুলোতে যুবলীগের নেতাকর্মীদের ভিড়ে শিক্ষার্থীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে সরেজমিনে ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৭টা থেকেই যুবলীগের নেতাকর্মীরা ক্যান্টিন ও খাবারের দোকানগুলোতে খাবার খাওয়া ও অর্ডার করে বাক্সভর্তি করে নিয়ে যান। এতে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো খাবার পাচ্ছেন না।
প্রতিটি হলের ওয়াশরুমগুলোও যেন বহিরাগত নেতাকর্মীদের দখলে। শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি।
এ ছাড়া পুরো হলজুড়ে যুবলীগের নেতাকর্মীদের অবাধ বিচরণ ও চিৎকার-চেঁচামেচিতে রিডিং রুমে পড়াশোনায়ও ব্যাঘাত ঘটছে। এমনকি, কোনো কোনো হলের স্পোর্টসরুমে খেলাধুলা করতেও দেখা যায় তাদেরকে।
এক অভিযোগে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারিতেও জড়িয়েছেন যুবলীগের এসব নেতাকর্মীরা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সকালে উঠে ওয়াশরুমে গেলাম, গিয়ে দেখি বিশাল বড় জটলা। তাদের গায়ের টিশার্ট আর মাথার ক্যাপ দেখেই বুঝলাম যে, তারা যুবলীগের সম্মেলনে এসেছে। এরপর কোনোমতে ফ্রেশ হয়ে ক্যান্টিনে খাবার খেতে গিয়ে তাদের ভিড়ে বসতেই পারলাম না। ভাবলাম দোকানে গিয়ে কিছু খাব। সেখানে গিয়েও দেখি একই অবস্থা।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে মানুষ আর গাড়ির শব্দ। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার জায়গা নেই। সব স্থান দখল করে রেখে বহিরাগত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলের দারোয়ানের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা জানান, প্রথম দিকে হলে বহিরাগতদের প্রবেশে একটু কড়াকড়ি করলেও কিছুক্ষণ পর হল ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সুপারিশে সবাইকে ঢুকতে দেওয়া হয়। এরপর থেকে কাউকে আর নিষেধ করা হয়নি। এ ব্যাপারে হল প্রশাসন থেকে কোনো নির্দেশনা পাননি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গাড়ি পার্কিং, রাস্তা ক্লিয়ার রাখা এবং বহিরাগতদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো দেখছে, তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। আর হল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে ছাত্রনেতা ও সকলের সহযোগিতায় হল প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, এটা হল প্রশাসনই দেখবে।’