টাইব্রেকারে জাপানের হৃদয় ভেঙে কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়া
ম্যাচের নির্ধারিত সময় ১-১ সমতা। অতিরিক্ত সময়েও মেলেনি গোলের দেখা। তাতে করে প্রথম টাইব্রেকার দেখল এবারের বিশ্বকাপ। যেখানে ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হৃদয় ভাঙল জাপানের। টাইব্রেকারের রোমাঞ্চে জাপানকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করল গেলবারের রানার্সআপরা। মূল ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত এক রাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো জাপানকে।
আজ সোমবার দিবাগত রাতে টাইব্রেকারে জাপানকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ক্রোয়াটরা। টাইব্রেকারে তিন-তিনটি সেভ করে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেন ডমিনিক লিভাকভিচ।
মূলত স্নায়ুর চাপ শেষ অবধি সামলাতে পারলো না জাপান। হলো না রূপকথার চাকা সচল রাখা। ১২০ মিনিট স্নায়ুর চাপ সামলে চলা জাপানের সূর্যোদয় আর হলো না বেলা শেষে। ১-১ গোলের ড্রতে নির্ধারিত সময় শেষ করা জাপান ৩-১ ব্যবধানে ট্রাইবেকারে হেরে গেলো ক্রোয়েশিয়ার কাছে।
কাতারের আল জানুব স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়াকে চেপে ধরে জাপান। ৪৩ মিনিটে মায়েডার গোলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় তারা। এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় জাপান। বিরতি থেকে ফিরে আগ্রাসী ক্রোয়েশিয়া বাড়িয়ে দেয় আক্রমণের মাত্রা। ৫৫ মিনিটে লভ্রেনের ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন ইভান পেরিসিচ।
এরপর সমানতালে চলে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ। বিনা যুদ্ধে ছাড় দিতে নারাজ দুই দল। ক্রোয়েশিয়া গতবারের রানার্সআপ, জাপানকে দেখে মনে হয়নি তার ভীত। বরং মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যতিব্যস্ত রাখে ক্রোয়াট রক্ষণভাগকে। কেবল কাঙ্খিত গোল আসছিল না।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর গোলের দেখা পায়নি দুই দলের কেউ। চেষ্টার কমতি রাখেনি ফরোয়ার্ডরা। কখনও গোলরক্ষকের মুন্সিয়ানা, কখনও লক্ষ্যভ্রষ্ট শটে শেষ হয় ৯০ মিনিট। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে ১০৪ মিনিটে প্রায় গোল পেয়েই বসেছিল জাপান। নিজেদের অর্ধ থেকে মিটোমার সলো রানে নেওয়া বুলেট শট প্রতিহত করেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক।
অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে প্রতি মূহুর্তেই মনে হয়েছে এই বুঝি গোল পেল জাপান, এই বুঝি ক্রোয়েশিয়া জয়ী গোল পেয়েই গেল। কিন্তু দুই গোলরক্ষক শেষ পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখেন তেকাঠি। খেলা গড়ায় ট্রাইবেকারে। যেখানে অভিজ্ঞতায় পিছিয়ে গেল ব্লু সামুরাই জাপান।
টাকুমি ও মিটোমার প্রথম দু'টো শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক লিভাকভিচ। যেখানে প্রথম দুই শটে লক্ষ্যভেদ করেন ভ্লাসিচ ও ব্রোজোভিচ। আসানোর তৃতীয় শটে জাপান গোল পায়, লিভাজা মিস করে ক্রোয়েশিয়া। জমে ওঠে খেলা। কিন্তু তা ধরে রাখতে ব্যর্থ জাপান। ইয়োশিদার চতুর্থ শটও ঠেকিয়ে দেন লিভাকোভিচ। সুযোগ কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শটে গোল করেন পাসালিক। চেষ্টার কমতি রাখেনি জাপান। তবে শেষমেশ বিস্ময়কর যাত্রার পরিসমাপ্তি ঘটে। যাওয়ার আগে সবার হৃদয় জিতে নিয়েছে জাপানিজরা। দিন শেষে খেলাটা ফলকেন্দ্রিক, যেখানে সফল ক্রোয়েশিয়া। আর সেইভের হ্যাটট্রিক করে নায়ক বলে গেলেন তেকাঠির প্রহরী লিভাকোভিচ।