মুক্তিযুদ্ধকালীন ফরাসি ফটোগ্রাফার ৫০ বছর পর বাংলাদেশ সফরে
ফরাসি ফটোগ্রাফার অ্যান ডি হেনিং যখন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের যুদ্ধকালীন গল্পগুলো দৃশ্যমানভাবে নথিভুক্ত করছিলেন, সেই সময় একজন যুবক তাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংসতা সম্পর্কে বিশ্বকে জানাতে অনুরোধ করেছিলেন। এই ৭৬ বছর বয়সী বিখ্যাত ফটোগ্রাফার, ‘উইটনেসিং হিস্ট্রি ইন দ্য মেকিং : অ্যান ডি হেনিংয়ের ফটোগ্রাফ’ প্রদর্শনীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তার ২৫ বছর বয়সী সময়ের সাংবাদিকতায় ফিরে যান।
সামদানী আর্ট ফাউন্ডেশন এবং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) যৌথভাবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। শুক্রবার প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। তিনি দীর্ঘ ৫০ বছর পর বাংলাদেশে ফিরে আসার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘১৯৭১ সালে যখন আমি বাংলাদেশের গল্পগুলো ক্যাপচার করছিলাম, তখন একজন যুবক বর্ণনা করেছিলেন যে কীভাবে নিরপরাধ লোকদের হত্যা করা হচ্ছে এবং আমাকে বিশ্ববাসীকে এটি জানাতে অনুরোধ করেছিলেন।’
মুক্তিযুদ্ধের অন্ধকার দিনের বিপরীতে বিজয় দিবসে খুশির মুখ দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে অ্যান ডি হেনিং বলেন, ‘এমন একটি দিনে ঢাকায় আসা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ ছিল। যখন জাতি বিজয় উদযাপন করছে এবং রাজধানীসহ সারাদেশে লাল-সবুজ পতাকা উড়ছে।’ এ ছাড়া ১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় যে স্থানগুলো পরিদর্শন করেছিলেন তার কয়েকটি সফর করবেন তিনি।
যুদ্ধকালীন গল্প কভার করার ক্ষেত্রে নারী ফটোগ্রাফার ও সাংবাদিকদের ভূমিকার তুলে ধরে অ্যান ডি হেনিং বলেন, ‘নারী সাংবাদিকরা তাদের পুরুষ সহযোগীদের মতো সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নারীর সংখ্যা কম হওয়া ছাড়া আর কোনও পার্থক্য ছিল না।’
অ্যান ডি হেনিং কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলেন যারা যুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চোখ এড়িয়ে বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছিলেন। এবং যারা বিদেশি বিদেশি সংবাদকর্মী ও ফটোগ্রাফারদের নির্বাসিত করেছিল। তার ছবিগুলো ছিল আশ্রয়প্রার্থী দুস্থ পিতা-পুত্র থেকে শুরু করে একটি ক্যাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের পাকিস্তানি স্যাবার জেটের গোলা বর্ষণ করা বাড়ি পর্যন্ত।
বঙ্গবন্ধুর যে রঙিন ছবিগুলো তিনি ধারণ করেছিলেন এবং কিউরেট করেছিলেন তা অল্প কিছু অবশিষ্ট ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে। কারণ ১৯৭৫ সালে তাঁর হত্যাকাণ্ড এবং পরবর্তী সামরিক শাসকদের দখলের পরে তাঁর বেশিরভাগ ছবি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।