আওয়ামী লীগকে পাল্টা কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান মির্জা ফখরুলের
আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে পূর্ব ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। একই দিনে আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ে পাল্টা কর্মসূচি প্রত্যাহারে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। যেকোনো শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেভাবে আমরা কর্মসূচি পালন করে আসছি। আওয়ামী লীগ প্রথম দিক থেকে চেষ্টা করছে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য। আমরা সেই সংঘাতকে এড়িয়ে চলেছি। আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে ইউনিয়ন পর্যায়ে; কথা হচ্ছে এবার আমরা প্রথম আওয়ামী লীগকে রিয়েক্ট করতে বাধ্য করছি। তারা ভীত সন্ত্রস্ত। তারা এখন নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্নভাবে আবার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এই কাজগুলো করছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত সচেতনভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তির লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করেছি। আমাদের প্রতিটি আন্দোলন একেবারে শান্তিপূর্ণ, অহিংস। ১০ ডিসেম্বর আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির পূর্বে আমাদের নেতা কর্মীদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, গুলি করেছে। এতে আমাদের একজন মারা গেছে। অফিস থেকে ৪৩৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাকে এবং মির্জা আব্বাসকেও গ্রেপ্তার করা হলো। তারপরও আমরা উসকানিতে পা দেইনি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার প্রথম থেকে চাচ্ছে এখানে উসকানি দিয়ে একটি সাংঘর্ষিক অবস্থা তৈরি করতে। সংঘাতময় অবস্থা তৈরি করার এবং পুরো বাংলাদেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তারা এজন্য এই কাজটি করেছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচি হয়েছে। এখন ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার মূল কারণ হচ্ছে সম্পূর্ণভাবে জনগণকে সম্পৃক্ত করে এই আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমরা ইতোমধ্যে মহানগর এবং বিভাগীয় পর্যায়ে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করেছি। এখন আমরা তৃণমূল পর্যায়ে অর্থাৎ বাংলাদেশের সমস্ত মানুষকে এই আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করার জন্য শান্তিপূর্ণভাবে আমরা এই আন্দোলন করবো।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিএনপির প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করছে। আবার ইউনিয়ন পর্যায়েও তারা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এতে করে আওয়ামী লীগের যে চরিত্র এটা উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে একটি সন্ত্রাসের দল। তারা সন্ত্রাস, ত্রাস সৃষ্টি করা, ভয় দেখানো, আক্রমণ করা; এভাবে তারা আমাদের কর্মসূচিকে নস্যাৎ করার জন্য পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। এই পাল্টা কর্মসূচিতে গণতন্ত্রই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে। তারা চেষ্টা করছে একটি অনিশ্চয়তার দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে সরকারকে বাধ্য করবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল চাইছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে দাবি মানতে বাধ্য করা হবে।’
‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চায়, তবে জনগণ যখন চাইবে তখন হরতাল অবরোধ সব হবে’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, মাহাবুবুল হক নান্নু, নাজিমুদ্দিন আলাম ও আমিনুল হক প্রমুখ। এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং এর সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।