সংলাপের কথা বলে আ.লীগ জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে ডাইভার্ট করতে চায় : মির্জা ফখরুল
সংলাপের কথা বলে জনদৃষ্টিকে আওয়ামী লীগ ভিন্ন দিকে ডাইভার্ট করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। ফখরুল বলেন, ‘মানুষ যা চায়, আওয়ামী লীগ তার উল্টো করে। তাদের চরিত্র হল ফ্যাসিবাদী। তারা উগ্রবাদী। তারা অন্যকে কথা বলতে দেয় না। গত ১৪ বছর ধরে তারা হিংসাত্মক কথা বলে আসছে। তারা হলো সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল। তারা তো আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানিকে মেরে বের করে দিয়েছে।’
‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সঙ্কট উত্তরণ প্রয়াসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা—একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সেখানে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সংলাপের কথা বলে জনদৃষ্টিকে সরকার ভিন্ন দিকে ডাইভার্ট করতে চায়। তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে। নির্বাচনের সময় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই। সুতরাং, আগে পদত্যাগ করুন। তারপর দেখব সেটা কীভাবে করতে হয়। দেশের মানুষ সেটা জানে।’ তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের লড়াই কিন্তু বিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য নয়। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করছি আমরা। গোটা দেশের মানুষ আজকে আমাদের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর পদ্ধতি তৈরি করতে পারিনি। তবে, দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গণতান্ত্রিক মানসিকতার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি সবার মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় খালেদা জিয়া দলের কথা চিন্তা করেননি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১১ সালে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেছেন। এরপর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেদিন গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দেশকে অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো।’
ক্ষমতাসীন সরকারের কথা টেনে বিএনপির এই শীর্ষ স্থানীয় নেতা বলেন, ‘আজকে যে দলটি ক্ষমতায় আছে তারা বার বার গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু, সেই দলটির হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে। গণতন্ত্র আমাদের অস্থিতে মজ্জায় ছিল, যা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল। কিন্তু, আওয়ামী লীগ একে একে গণতান্ত্রিক সব অধিকার হরণ করেছে। তারা জরুরি অবস্থা, সামরিক আইন এবং শেষে বাকশাল কায়েম করেছিল।’
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের নাকি বিদ্যুৎ ফেরি করে বিক্রি করতে হবে। তিন ঘণ্টাও তো বিদ্যুৎ মিলছে না। হাসপাতালে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। কৃষিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। সবাইতো বিল দিচ্ছি। তাহলে, টাকা গেল কোথায়? তারা তো কয়লা আনতে পারে না। আসলে তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে। তাদের কাছে টাকা নেই, ডলারও নেই। জাতির কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। কলকাতা-পশ্চিমবঙ্গে লোডশেডিং নেই। তাহলে, আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে কেন সেটা করতে পারলাম না।’