সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী জাহাজে আগুন, নিখোঁজ ৪
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ‘সাগর নন্দিনী-২’ নামের একটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণের ফলে লাগা আগুনে চার জন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও চার জন শ্রমিক।
আজ শনিবার (১ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে এনে দগ্ধদের উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে অভিযান চলছে। আহতদের মধ্যে দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য দুইজনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পদ্মা অয়েলের ডিএস হোসেন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর দুইটার দিকে জাহাজের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় মাস্টার ব্রিজটি (চালকের স্থান) দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে জাহাজের নয়জন স্টাফের মধ্যে চার জন দগ্ধ হন। দগ্ধরা হলেন, জাহাজের স্টাফ পাবনা জেলার মো. মোদাচ্ছের হোসেনের ছেলে শাকিল (৩৫), চাঁদপুরের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে ফরিদুল আলম (৫৩), পিরোজপুরের সালাম ব্যাপারীর ছেলে ইকবাল হোসেন (২৭) ও বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জের শিবপুরের মনিরুল ইসলামের ছেলে মাইনুল ইসলাম (২৯)। তাঁরা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পান।
পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আহতদের নদী থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে চার জন। জাহাজ থেকে লাফিয়ে নদীতে পড়ে বেঁচে গেছেন বাবুর্চি বেলায়েত হোসেন। ডুবে যেতে থাকা জাহাজটি উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভিক।
ঝালকাঠি পদ্মা অয়েল কোম্পানীর কর্মী আব্দুস সালাম জানান, ঈদের দুইদিন আগে নন্দিনী-২ নামে একটি তেল বোঝাই জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে এসে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলের ডিপো সংলগ্ন এলাকায় নোঙর করে। জাহাজটিতে প্রায় ১১ লাখ লিটার পেট্রোল ও ডিজেল ছিল। আজ বিকেলে জাহাজটি থেকে তেল খালাস করার কথা ছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জাহাজের বাবুর্চি বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আগুন লাগার সময় আমি জাহাজ থেকে লাফিয়ে নদীতে পড়ি। পরে সাঁতরে তীরে উঠি। ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লেগেছে। আমাদের আরও চারজন স্টাফ নিখোঁজ রয়েছে।’
ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুহিতুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজ থেকে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে চারজন। তাদের সন্ধানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস।’
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ট্রলারযোগে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।’
এর আগে ২০২১ সালের ১২ নভেম্বর একই স্থানে একই মালিকের সাগর নন্দিনী-৩ নামে আরও একটি তেলের জাহাজে আগুনে দগ্ধ হয়ে সাত জন নিহত হয়েছিল।