সাংবাদিকদের ওপর রেগে বিচারক বললেন, ‘মজা নিয়েন না’
জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে জামিন দিয়েছিলেন কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈল। সেই ঘটনায় হাইকোর্ট ওই বিচারককে তলব করেন। সেই তলবের জেরে আজ বুধবার (১৯ জুলাই) হাইকোর্টে আসেন সেই বিচারক। শুনানি শেষে দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীরা জেলা জজের বক্তব্য জানতে চাইলে ও ছবি তুলতে গেলে রেগে যান তিনি। গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘মজা নিয়েন না।’
আজ বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে কক্সবাজার জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলের শুনানি হয়। বেলা পৌণে ১১টায় শুরু থেকে প্রায় একঘণ্টা চলে শুনানি। এ সময় আদালতে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন বিচারক। তবে, হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ দাখিল করা তার লিখিত ব্যাখ্যা যথাযথ না হওয়ায় ক্ষমার আবেদন গ্রহণ করেননি। আগামীকাল এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়।
আদালতে জেলা জজের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা ও অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল। অপরপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন, অ্যাডভোকেট এস এম আমজাদুল হক, অ্যাডভোকেট সাকিল আহমাদ।
এর আগে গত ২১ জুন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন না মঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে একইদিনে জামিন দেওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজকে তলব করেন হাইকোর্ট। ওইদিন আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন।
ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে এই আইনজীবী জানান, জমি দখল নিয়ে চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটানোর অভিযোগে মিঠাছড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুছ ভুট্টোসহ নয়জনের বিরুদ্ধে একই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান খোদেস্তা বেগম রিনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত–১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী দ্রুত বিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন। এ মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইলে হাইকোর্ট গত ১১ এপ্রিল তাদের ছয় সপ্তাহের জামিন দিয়ে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের সেই আদেশ মোতাবেক গত ২১ মে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে জামিন চান। আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু, একইদিন আসামিরা কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। তখন জেলা ও দায়রা জজ তাদেরকে জামিন দেন। এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন মামলার বাদী রিনা। তার এই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট জেলা ও দায়রা জজকে তলব করে আদেশ দেন।