দুই মন্ত্রীর মন্তব্যে বিচার বিভাগ স্তম্ভিত ও হতবাক
বিচার বিভাগ এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর করা মন্তব্যে বিচার বিভাগ স্তম্ভিত ও হতবাক হয়ে পড়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ অনুভূতি প্রকাশ করেন।
সকালে এক আদেশে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ বিচার বিভাগ এবং প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হককে ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় সশরীরে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের নয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে ১৪ মার্চের মধ্যে আদালত অবমাননার বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বেঞ্চে বসে আদালত আদেশে বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে সর্বোচ্চ আদালত সম্পর্কে প্রচারিত অশোভন কিছু মন্তব্যে বিচার বিভাগ স্তম্ভিত ও হতবাক। এটি স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।’
এর পর আদালত দুই মন্ত্রীকে নোটিশ ইস্যু করেন। নোটিশে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়। মানহানিকর বক্তব্যের বিষয়ে লিখিত আকারে ১৪ মার্চ জবাব দিতে বলা হয়েছে এবং ১৫ মার্চ সকাল ৯টায় সশরীরে দুই মন্ত্রীকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিয়া, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি মো. ইমান আলী, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি বজলুর রহমান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিলের রায়কে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের সমালোচনা করে গত শনিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে বক্তব্য দেন সরকারের দুই মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও আ ক ম মোজাম্মেল হক। প্রধান বিচারপতি তাঁর আসনে থাকতে চাইলে ‘অতিকথন’ বন্ধ করা উচিত বলেও এক মন্ত্রী পরামর্শ দেন।
একই সঙ্গে মীর কাসেম আলীর মামলায় আপিল বিভাগের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি যেসব মন্তব্য করেছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে ওই মামলায় পুনরায় শুনানি করার আহ্বান জানান দুই মন্ত্রী।