জিয়া, এরশাদ-খালেদা কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি ঝুলিয়ে রেখেছিল : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান, এরশাদ কিংবা খালেদা জিয়া সবাই কওমি মাদরাসার স্বীকৃতির কথা বলে মুলা ঝুলিয়ে রেখেছিল, কিন্তু স্বীকৃতি দেয়নি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি হয়েছে। তাদের এখন সরকারি চাকরিও হচ্ছে।’
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা অডিটোরিয়ামে তথ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার মাদরাসা ও ইসলামী গণশিক্ষা কার্যক্রমের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন। ইসলামি দেশগুলোর সংস্থা ওআইসির সদস্য হয়েছিলেন। আজ তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে ইসলামের জন্য যা করেছেন, অন্য কোনো সরকার তা করেনি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলামি শিক্ষার প্রসারে কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি অন্য কেউ দেইনি এবং ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ও অন্য কেউ প্রতিষ্ঠা করেনি, জেলা-উপজেলায় মসজিদ-মক্তব নির্মাণ করে ইমাম-প্রশিক্ষকদের বেতন-ভাতা অন্য কোনো সরকার দেয়নি, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও তাঁর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার এসব বাস্তবায়ন করেছে। আমাদের সরকার সমগ্র বাংলাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ করে দিচ্ছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মসজিদ ভিত্তিক মক্তব প্রতিষ্ঠা, প্রতিটি মক্তবের শিক্ষককে মাসে পাঁচ হাজার ২০০ টাকা করে ভাতা দেওয়া, ২০ হাজার দারুল আরকাম ইবতেদায়ি মাদরাসাকে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা দেওয়া বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা নিজ উদ্যোগে চালু করেছেন।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ায় আমার ব্যক্তিগত তহবিল এবং পারিবারিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ২৪টি নতুন মসজিদ ভবন করে দেওয়া হয়েছে। আমি প্রতিবছর নিয়মিত আলেম ওলামাদের কয়েকজনকে হজে পাঠাই, ওমরা করারও ব্যবস্থা করে দেই। কেউ কোনো কাজে আমার কাছে আসলে যেন ফেরত না যায় সেই নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। শুধু আলেম-ওলামাদের জন্য নয়, আমার এলাকার হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের জন্যও একইভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমি আপনাদের সঙ্গে ছিলাম, আছি ও থাকব।’
আলেম-ওলামাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা সামাজিক নেতা, সমাজের যেকোনো আচার-অনুষ্ঠান কিংবা মসজিদের নামাজে সবাই আপনাদের কথা শুনে। আমি যে সবার জন্য কাজ করে যাচ্ছি, তা আপনারা অনুগ্রহ করে বলবেন। আজকের বদলে যাওয়া রাঙ্গুনিয়া, কিংবা এদেশের উন্নয়নের কথা আপনারা মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। আগামী নির্বাচনে যেন সবাই আমার জন্য তাদের দরজাটি খোলা রাখেন, সেই আবেদনটুকু রাখছি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম সম্পাদক জসিম উদ্দিন ও ড. আবদুল মাবুদের যৌথ সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন মাওলানা আল্লামা শাহ মুহাম্মদ সুলতান আহমদ, মাওলানা মীর মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মাওলানা আবুল বয়ান, মাওলানা ওমর ফারুক, মাওলানা আ ন ম নাজমুল হোসাইন নঈমী, মাওলানা আইয়ুব নূরী, মাওলানা আব্দুর রহিম। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে তথ্যমন্ত্রীর ঐচ্ছিক ফান্ড থেকে দুস্থ রোগী, অসহায় ও দরিদ্র ২০০ মানুষের মাঝে ১০ লাখ টাকার চেক বিতরণ করেন ড. হাছান মাহমুদ।