ভালোবাসার বাগানে দুয়োর মালা পরল বাংলাদেশ
টানা চার হার। ব্যাটে নেই রান। বোলিংয়েও হতাশা। সবমিলিয়ে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল টালমাটাল। তবুও, ইডেনের প্রাঙ্গনে আজ ঝড় বইছিল বাংলাদেশকে নিয়ে। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ—শব্দে মুখরিত ছিল নন্দনকাননের আঙিনা। শুধু কি বাংলাদেশ? সাকিব-লিটন-মুস্তাফিজদের নামের জোয়ারেও মুখোরিত ছিল এই মাঠ। গায়ে লিটন-মুস্তাফিজদের জার্সি চাপিয়ে পুরো স্টেডিয়াম পাড়াকেই লাল-সবুজে রূপ দিয়েছিলেন ভক্তরা।
অথচ রাত নামতেই তা পাল্টে গেল সেই চিত্র। যেই আঙিনায় সাকিব-তামিমদের নামের প্রশংসার জোয়ার বইছিল, সেই প্রাঙ্গণ ভরে উঠলো দুয়োর ধ্বনিতে। অবশ্য হবেই বা কেন? নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাচটি অন্তত শতভাগ জেতার আশা ছিল বাংলাদেশের। ভক্তরাও চোখে জয়ের স্বপ্ন নিয়ে ছুটে এসেছেন ভারতে। এই ম্যাচকে কল্পনায় রেখে প্রায় ১০ হাজার বাঙালি এসেছেন ভারতে। কিন্তু তার ফলাফল শূন্য। জয় তো দূরে নূন্যতম লড়াইও উপহার দিতে পারল না সাকিব আল হাসানের দল। এক রাশ শূন্যতা নিয়েই মাঠ ছেড়েছেন ভক্তরা। তবে, এর মধ্যে কাউকে কাউকে দুয়ো দিতেও দেখা যায়। বাংলাদেশের বিদায়ের ঘণ্টা বাজার সময় যতই ঘনাচ্ছিল আজ ততই সাকিবদের—ভুয়া ভুয়া বলছিলেন দর্শকরা। একটা সময় পুরো বাংলাদেশকে নিয়েই দুয়ো দিচ্ছিল স্টেডিয়াম চত্তর।
অথচ ঠিক দুপুরেই একই জায়গায় চলছিল বাংলাদেশের স্লোগান। ইডেন গার্ডেন্সের মূল ফটকের অনেক দূর থেকেও চোখ ভাসছিল লাল-সবুজের জার্সি। হারতে থাকা বাংলাদেশকে নিয়ে আশায় বুক বাঁধছিলেন ভক্তরা। কিন্তু, সেই আশার মান মোটেই রাখতে পারলেন না মাঠের প্রতিনিধিরা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ মাধ্যমে এসে দায় নিলেন সাকিব আল হাসান। স্বীকার করলেন দল হিসেবে কিছুই করতে পারেননি তারা। না ব্যাটিং, না বোলিং—কোনো পর্যায়ে জ্বলে না ওঠার দায় স্বীকার করেছেন অধিনায়ক। তার ভাষায়, ‘‘আমরা পুরো টুর্নামেন্টে ভালো করতে পারিনি। আজকেও তার ব্যাতিক্রম ছিল না। এটা হজম করা কঠিন ছিল। ক্রিকেটে এমনটা হতে পারে। আমি কৃতিত্ব দিতে চাই নেদারল্যান্ডসকে। তারা দুর্দান্ত বোলিং করেছে। আমি জানি না, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা খুবই খারাপ করেছি। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ ছাড়া কেউই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে পারেনি।’
সাকিব মনে করেন পর্যাপ্ত আত্মবিশ্বাসের অভাবই ডুবিয়েছিল বাংলাদেশকে, ‘আমি মনে করি, আমাদের আত্নবিশ্বাসের অভাব রয়েছে। আমরা অনেক আশা নিয়ে এসেছিলাম। তবে তার ছিঁটেফোটাও পূরণ হয়নি। পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের খেলায় আমি হতাশ। সত্যি কথা বলতে, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। আমরা এখন শুধু চেষ্টা করতে পারি, এছাড়া আমাদের কাছে কিছুই করার নাই।’
ভক্তদের ভালোবাসার মান না রাখতে পারার ব্যাখ্যায় অধিনায়ক বলেছেন, ‘আমাদের কাছ থেকে ভক্তদের অনেক প্রত্যাশা। আমরা তা পূরণ করতে পারিনি। তাই তারা আমাদের যেকোনো কিছু বলার অধিকার রাখে। আর এমন পারফরম্যান্সের পর সেটাই স্বাভাবিক। আর এটা স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ। আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছিল না।’