সেবার নামে অনেক হাসপাতাল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছে : হাইকোর্ট
সিলেটের হবিগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর ঘটনায় একজন চিকিৎসক ও হাসপাতাল মালিকসহ চারজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছেন হাইকোর্ট। চার আসামির করা আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত বলেন, ‘দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় সম্প্রতি রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। এ ধরনের অপরাধ করে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। চিকিৎসা সেবার নামে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেবার পরিবর্তে তারা অর্থের পেছনে ছুটছে।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রহিমা আক্তার পেটে টিউমার নিয়ে চিকিৎসার জন্য সিলেটের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় রহিমার সঙ্গে আসা আত্মীয়-স্বজনকে ভুল বুঝিয়ে স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে তাকে নিয়ে হবিগঞ্জের ‘দি জাপান বাংলাদেশ’ হাসপাতালে ভর্তি করেন আসামিরা। পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ ৯ সেপ্টেম্বর রোগীর অপারেশন করেন। তিন দিন পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
গত ২ অক্টোবর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন রহিমা। সেখান থেকে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা শেষে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানান, জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ টিউমার অপারেশনের সময় ভিকটিম রহিমার খাদ্যনালী, জরায়ু এবং বাঁপাশের কিডনিও কেটে ফেলেছেন। এমনকি টিউমার যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর মারা যান রহিমা। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে মামলা করেন রহমত আলী।
আজ এ মামলায় হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ, দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম ও আমীর আবেদীন এবং ম্যানেজার জনি আহমেদ। হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা তাদের আদালত থেকে নিজেদের হেফাজতে নেন।