হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় পেছাল
গাজায় সাত সপ্তাহ ধরে চলমান নৃশংস ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে সাময়িক বিরতি আনতে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চার দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়টি কোনোভাবেই শুক্রবারের আগে শুরু হচ্ছে না। খবর এএফপির।
এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা তাচি হানেগবি বিষয়টির ইঙ্গিত দিয়ে জানান, হামাসের হাতে বন্দি ৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশিকে মুক্তির দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে, তাদের মুক্তি পাওয়ার বিষয়টি বাস্তবে রূপ পেতে শুক্রবার নাগাদ সময় লাগবে।
এক বিবৃতিতে হানেগবি বলেন, ‘আমাদের বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে চলছে এবং তাদের মুক্তি দুপক্ষের মধ্যে চুক্তির আলোকেই ঘটবে। তবে, তা শুক্রবারের আগে নয়।’
অপর এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেন, ‘হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি আজ বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হচ্ছে না, যা ইতিপূর্বে আশা করা হয়েছিল।’
এদিকে, যুদ্ধবিরতি শুরু হতে দেরি হওয়ায় বন্দিদের বড়িফেরা নিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও দীর্ঘায়িত হলো। পাশাপাশি ২০ লাখ গাজাবাসী প্রার্থনা করছেন, ৪৭ দিন ধরে চলমান যুদ্ধ ও ধ্বংসযজ্ঞ যেন দ্রুত থেমে যায়।
তবে জটিল ও সাবধানী চুক্তির আওতায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চার দিনের যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে মতৈক্য হয়েছে, যার আওতায় হামাস ৭ অক্টোবরের হামলার সময় তাদের হাতে জিম্মি করে নেওয়া লোকজনের মধ্যে ৫০ জনকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগারে বন্দি ১৫০ জন ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তির আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি তারা সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরে চলতে থাকা বিরামহীন বিমান হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত গাজায় আরও বেশি মানবিক সাহায্যপণ্য প্রবেশের অনুমতি দেবে।
তবে এখনও এটা পরিষ্কার নয়, কেন এই যুদ্ধবিরতি বা বন্দি বিনিময় শুরু হতে দেরি হচ্ছে? অথবা তা বাস্তবায়নে কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি হলো কি না! এই চুক্তি আজ বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) থেকেই কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। যদিও ইসরায়েলের কট্টর ডানপন্থি সরকারের ভেতর থেকেই চুক্তি নিয়ে বিরোধিতার ডাক এসেছিল। ডানপন্থি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির এই চুক্তিকে একটি ‘ঐতিহাসিক ভুল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এতে হামাস শক্তি সঞ্চয় করবে এবং ইসরায়েলি সৈন্যদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে তিনি মনে করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবরের হামলায় হামাস ও ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীরা ইসরায়েল থেকে ২৪০ জনকে বন্দি করে নিয়ে আসে। এ ছাড়া হামলায় তারা এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হয়। এর প্রতিশোধ নিতে গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় স্থল, আকাশ ও নৌপথের আগ্রাসী হামলা চালিয়ে তারা ১৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে।