তনু হত্যায় ছিল একাধিক ব্যক্তি, জানাল সিআইডি
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আর এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিয়েছে একাধিক ব্যক্তি। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে।
আজ মঙ্গলবার কুমিল্লায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কার্যালয়ে এ কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার নাজমুল করিম খান। তনুর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
নাজমুল করিম খান বলেন, ‘তনুর হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত। ডিএনএ ও অন্যান্য পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে, একাধিক ব্যক্তির অংশগ্রহণে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। চিকিৎসকদের দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের সঙ্গে সিআইডির তদন্তের অনেক গড়মিল রয়েছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে আরো স্পষ্ট করে বলা যাবে।’
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘আমাদের তদন্তে মনে হয়েছে এটি পরিকল্পিত হত্যা। আমাদের তদন্ত একদিন প্রকৃত আসামিকে চিহ্নিত করবে। আসামিকে জাতির সামনে আমরা নিয়ে আসতে পারব।’ তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু একটি সেনসেটিভ জায়গায় ঘটনাটি এবং মৃত্যুর কারণও জানা যায়নি, তাই হয়তো বা সময় লাগছে। কিন্তু আমরা আশাবাদী।’
নাজমুল করিম খান বলেন, ‘তদন্তে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন একটা দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। ওই নির্দেশনাটি যে কনক্লুসিভ এভিডেন্স তা বলা যাবে না। এর ওপরই যে তদন্ত হবে তাও বলা যাবে না। তবে আমরা একটা দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকি। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রথম ময়নাদন্তের প্রতিবেদন থেকে তেমন কোনো দিকনির্দেশনা পাইনি। তবে তদন্তে আমাদের দিকনির্দেশনা আছে। অন্যান্য বিশ্লেষণেও আমাদের দিকনির্দেশনা আছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সে বিশ্লেষণের আলোকে এবং দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেখে আমরা বুঝতে পারব যে তদন্ত কোন দিকে যাচ্ছে।’
এর আগে বেলা ৩টায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে দ্বিতীয় বারের মতো জিজ্ঞাসাবাদ করতে সিআইডি কার্যালয়ে ডাকা হয়। টানা ৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শারমিন সুলতানাকে।
দুপুরে তনু হত্যা মামলার তদন্ত সহায়ক কমিটির প্রধান সিআইডির ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডির তদন্তদল কুমিল্লা সেনানিবাসে সেনা সদস্যদের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এ সময় দলের সদস্যরা তনুর বাবা, মা ও ভাইয়ের সঙ্গেও কথা বলেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য নাজমুল করিম খান জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে এ পর্যন্ত সামরিক ও বেসামরিক মোট ৫২ জনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
তনু হত্যাকাণ্ডের আজ ২৯তম দিন। এখন পর্যন্ত হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।