বিটিভি ভবনে যাওয়া শিল্পীদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা হয়তো আর কখনও ফিরে আসবে না’: সাদিয়া আয়মান
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এই আন্দোলনে শিক্ষার্থী হত্যার গ্রহণযোগ্য বিচার এবং গণগ্রেফতার বন্ধসহ তাদের বিভিন্ন দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফার্মগেটে সমাবেশ করেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশিদ, পরিচালক অমিতাভ রেজা, টিভি অভিনেতা মোশাররফ করিম, চলচ্চিত্র নায়ক সিয়াম, নায়িকা বাঁধন ও মিথিলাসহ দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পীরা। সমাবেশে প্রাণহানির বিচার চেয়েছেন তারা।
অন্যদিকে একই দিনে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) পরিদর্শন করেছেন সংসদ সদস্য ও অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী শমী কায়সারসহ বেশকিছু শিল্পী। এ সময় বিটিভিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন শিল্পীরা।
গতকাল শুক্রবার (০২ আগস্ট) রাতে ফেরদৌস-শমীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে তরুণ অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান লিখেছেন, ‘একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতা–অভিনেত্রীরা বিটিভির প্রাঙ্গণে গিয়ে চোখের পানি ঝরিয়েছেন। অবশ্যই তাঁদের জীবন ও ক্যারিয়ারের সঙ্গে বিটিভি–কেন্দ্রিক স্মৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাঁদের দুঃখ পাওয়াটা হয়তো স্বাভাবিক। কিন্তু এতগুলো ছাত্র, ছাত্রী, শিশু, মা, বোন, সাধারণ মানুষ যে মারা গেল, তা নিয়ে একবারও কিচ্ছু বললেন না! একবারও দুঃখ প্রকাশ করলেন না। একবারও এই মানুষগুলোর হত্যার বিচার চেয়ে কিছু বললেন না। কেন?’
শিল্পীদের একাংশের নীরবতার সম্ভাব্য কারণও নিজেরও স্ট্যাটাসে ব্যাখ্যা দিয়ে সাদিয়া লেখেন,‘কারণ, যাঁরা এই আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা আপনাদের কেউ না। তাঁদের বা তাঁদের পরিবারের দ্বারা আপনাদের কোনো লাভ হবে না, স্বার্থ হাসিল হবে না এবং ক্ষমতাও পাবেন না। তাই কি? নিজেদের লাভক্ষতি চিন্তা করে, ক্ষমতার স্বার্থে কিংবা কাউকে দেখানোর জন্য আপনারা যে কথাগুলো ক্যামেরার সামনে বলেছেন, এগুলো সারা জীবন আর্কাইভে তো থাকবেই, আমাদের মনেও থেকে যাবে।’
নব্বইয়ের দশকের যেসব শিল্পীর কাজ দেখে বড় হয়েছেন, তাঁদের একাংশের এমন কর্মকাণ্ডে হতাশাও প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী লিখেছেন,‘জেনারেশন টু জেনারেশন জানবে, নব্বইয়ের দশকের যাঁদের অভিনয় টিভি স্ক্রিনে দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি, এখন তাঁদের বাস্তব জীবনের কর্ম দেখে আমরা বিস্মিত ও লজ্জিত! দুঃখের সহিত জানাচ্ছি যে আপনাদের প্রতি শ্রদ্ধা হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না।’