হোয়াইটওয়াশ এড়াতে শনিবার মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বড়রা হোক কিংবা ছোটরা, বাংলাদেশের সামনে ভারত মানেই বিশাল এক জুজু। সাম্প্রতিক সময়ে আইসিসি ইভেন্ট কিংবা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, সব জায়গাতেই ব্যর্থ লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন নিয়ে ভারতে সিরিজ খেলতে যাওয়া বাংলাদেশের সামনে এখন হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়ানো বড় চ্যালেঞ্জ।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর এবার টি-টোয়েন্টিতেও ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করার শঙ্কায় বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জেতা তো দূরে থাক, ভারতের সঙ্গে ঠিকঠাক লড়াই করতে পারেনি বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলা বাংলাদেশের হঠাৎ ছন্দপতনে বেশ অবাক সমর্থকরাও।
প্রথম দুই ম্যাচে বোলিংয়ের চেয়ে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে বেশি ভুগিয়েছে ভারত। বিশেষ করে হার্দিক পান্ডিয়া, নিতীশ রেড্ডিরা বাংলাদেশের বোলারদের পাত্তাই দেননি। তাসকিন-মুস্তাফিজ, সবাই ভালো শুরু করলেও রানের চাকা থামাতে পারেননি। তাই হায়দরাবাদে ভারতের এসব ইনফর্ম ব্যাটারদের থামনোই হবে বড় চ্যালেঞ্জ।
অবশ্য বোলারদের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যর্থতার পাল্লা আরও বেশি ভারী। বিশেষ করে লিটন-শান্তরা দায়িত্ব নিতে না পারায় চাপে পড়ছে পুরো দল। বাজে বলে বড় শট খেলতে না পারার ব্যর্থতা বেশি ভোগাচ্ছে স্বাগতিকদের। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে ভারতের তারকা বোলার আর্শদীপ-বরুণ চক্রবর্তীদের সামনে দাঁড়াতেই পারেন শান্ত-লিটনরা। তাই তৃতীয় ম্যাচে ব্যাটারদের রানে ফেরার কোনো বিকল্প নেই।
অবাক করার মতো বিষয় হলো ভারত সিরিজকে শিক্ষাসফর হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। শুনতে অবাক লাগলেও ম্যাচপূববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই জানিয়েছেন ফিল্ডিং কোচ নিক পোথাস। এই প্রসঙ্গে পোথাস বলেন, ‘আমরা কিছুটা ভাগ্যবানও যে ভারত সফরে আসতে পেরেছি। কারণ এখানে অনেক কিছু শেখা হয়েছে আমাদের। শিক্ষাটা সৎ ভাবে হতে হবে। আপনি চাইলে বিশ্বের সেরা কারও সাথে কথা বলে দেখতে পারেন, তারা আপনাকে বলবে যে, প্রতিদিনই শেখার দিন। যখন আপনি শেখা বন্ধ করে দেবেন, তখনই সমস্যা শুরু হবে। ফলে এটা (শিক্ষা) কোনো সমস্যা নয় আমাদের।’
ছন্দহীনতার পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য দুশিন্তার কারণ হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামের উইকেট। যেখানে রীতিমত রান উৎসব হয়। সবশেষ আইপিএলে মুম্বাই-হায়দরাবাদে ম্যাচে রেকর্ড ৫২৩ রানের সাক্ষী হয়েছিল এই মাঠ। তবে স্পিনাররাও সহায়তা পায় কিছুটা। এই ভেন্যুতেই ২০১৯ সালে ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। পরিসংখ্যান বলে ফ্ল্যাট উইকেটে হয় এখানে যেখানে নিরাপদ রান ২০০’র বেশি। যদিও এই ম্যাচে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। তাই টস হতে পারে বড় ফ্যাক্টর।
সিরিজ নিশ্চিত হওয়ায় এই ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকা খেলোয়াড়দের সুযোগ দিতে পারে ভারত। ধারণা করা হচ্ছে সানজু স্যামসন, রিয়ান পরাগ, মায়াঙ্ক যাদব ও ওয়াশিংটন সুন্দরকে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। তাদের পরিবর্তে একাদশে জায়গা পেতে পারেন রবি বিষ্ণুই, জিতেশ শর্মা, তিলক ভার্মা ও হারশিত রানাকে।
পরিবর্তন আসতে পারে বাংলাদেশ একাদশেও। পেসার তানজিম সাকিব প্রথম ম্যাচে সুযোগ না পেলেও দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশে ফিরেই দেখিয়েছেন চমক। তবে, জায়গা হারাতে পারেন টানা দুই ম্যাচে ব্যর্থ ব্যাটার জাকের আলী অনিক। তার পরিবর্তে দলে ঢুকতে পারেন স্পিনিং অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী।
এদিকে, এই ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করে শেষ হবে ভারত সফর ? নাকি রিয়াদের বিদায়কে স্মরণীয় করে জয় নিয়ে দেশে ফিরবেন শান্তরা। সেই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। হায়দরাবাদে তৃতীয় টি-টোয়েন্টি শুরু শনিবার (১২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
বাংলাদেশ সম্ভাব্য একাদশ : পারভেজ হোসেন ইমন, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান।