দিনভর দেখা মেলেনি সূর্যের, তীব্র বাতাসে জনজীবনে দুর্ভোগ
পঞ্চগড়ে দিনভর সূর্যের দেখা মেলেনি। সারাদিন আকাশ ছিল মেঘাচ্ছন্ন আর পরিবেশ কুয়াশাচ্ছন্ন। বইছে তীব্র বাতাস। তাপমাত্রা বাড়লেও তীব্র হিমেল বাতাসে বেড়েছে জনজীবনে দুর্ভোগ।
আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সকাল ৬টায় এখানে ১৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৯টায় ১৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৭ ভাগ। প্রতি ঘণ্টায় বাতাসের গতি ছিল ১৬ কিলোমিটার। আজকে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল মঙ্গলবার এখানে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল। তবে সকালেই সূর্যের মুখ দেখা গিয়েছিল। সারাদিন রোদের তেজ ছিল। আজ তাপমাত্রা বাড়লেও কুয়াশা ও তীব্র বাতাসে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। সকাল থেকে হাটবাজার ও রাস্তাঘাটে যানবাহনের সংখ্যা কম দেখা গেছে। তবে অনেকেই জীবিকার প্রয়োজনে শীতের মধ্যেও ঘর থেকে বের হয়েছেন।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সরকারি-বেসরকারিভাবে যে পরিমাণ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। তবে সবাই শীতবস্ত্র বিতরণ করছে জেলা শহর বা উপজেলা সদরে। গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র অভাবী মানুষরা শীতবস্ত্র পাচ্ছে না। অনেকেই কম্বল ও গরম কাপড়ের জন্য বিভিন্ন জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।
জেলা শহরের ডোকরোপাড়া এলাকার আলী হোসেন জানান, সারাদিন কুয়াশা আর তীব্র বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় আজকে আকস্মিকভাবে শীত বেশি অনুভুত হচ্ছে। এ অবস্থা বিরাজ করলে রাতে আরও বেশি শীত লাগবে।
মসজিদপাড়া এলাকার সাইফুদ্দিন মানিক জানান, শীতের চিরচেনা দৃশ্য দেখলাম। আজ সারা দিন সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। বেশ বাতাস বয়ে যাচ্ছে। গরম কাপড় ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না।
মোটরসাইকেলচালক ওমর ফারুক জানান, হাতমোজা, পা মোজা ও কানটুপি পরলেও মোটরসাইকেল চালাতে ঠান্ডা লাগে। সকালের দিকে তো কুয়াশায় ওপরের কাপড় ভিজে যায়।
ভ্যানচালক মফিজুল জানান, ঠান্ডার কারণে শহরে লোকজন কম। কাজকামও নাই। যাত্রী না থাকায় ভাড়াও হচ্ছে না। ভ্যান চালাইলে হাত-পা ঠান্ডায় অবশ হয়ে যায়।
সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ব্রম্মতলপাড়া এলাকার নুরুজ্জামান জানান, সীমান্তের গ্রামের দরিদ্র মানুষ শীতবস্ত্র পায় না। শীতবস্ত্রের আশায় বৃদ্ধরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন।
পঞ্চগড় সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব সরকার জানান, আকস্মিকভাবে আজকে কুয়াশা ও হিমালয়ের হিমেল বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। আবহাওয়া সাধারণ মানুষের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। দ্রুত সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা জরুরি। সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।