ভোটাধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে : বকুল
জনগণ ভোটাধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল।
আজ বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে খুলনার একটি হোটেলে মহানগর বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন রকিবুল ইসলাম বকুল।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের প্রয়োজনে সংস্কার আনতে হবে। তাই বলে, সংস্কারের নাম করে আমরা এমন কিছু হতে দিতে পারি না, যেটা আমাদের গণতন্ত্রকে বিঘ্নিত করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে কাল বিলম্ব না করে এ সংকট থেকে মুক্ত করতে শিগগিরই নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনার দাবি জানিয়ে রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, বিগত ১৬ বছর বিদেশ থেকে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশছাড়া হয়েছেন। গণতন্ত্র না থাকলে সংস্কার হয় কীভাবে? দেশের জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
রকিবুল ইসলাম বকুলআরও বলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের মধ্যদিয়ে আন্দোলনের প্রথম পর্ব শেষ হয়েছে। এখন আমাদের কাজ হলো জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণের ভোটাধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। গত ১৬ বছরের পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার সরকার দেশের লাখ লাখ মানুষেকে নির্যাতন করেছে। অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে। পালিয়ে যাওয়ার আগে দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। ৩০ হাজার মানুষকে আহত করেছে।
কেন্দ্রীয়নেতা বকুল আরও বলেন, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে নানা প্রতিকূলতার মধ্যদিয়ে সময় পার করতে হয়েছে। তারমধ্যে মহানগর বিএনপির গতিশীল নেতৃত্বে নগরীর ৩৪টি ওয়ার্ড ও পাঁচটি থানার কমিটির কাউন্সিলর সম্পন্ন হয়েছে। ওয়ার্ড ও থানা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করে খুলনাসহ সারা বাংলাদেশে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন খুলনা বিএনপির নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থেকে সব যড়যন্ত্র প্রতিহত করার আহ্বান জানান।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু।
সভায় আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মহানগর বিএনপির সম্মেলন সম্পন্নর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ ছাড়া ১৫ জানুয়ারির মধ্যে মহানগরীর অন্তর্গত ৩১টি ওয়ার্ড ও তিনটি ইউনিয়ন কমিটির পদবিন্যাসের সিদ্ধান্তও হয়।
সভা থেকে চলতি জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে মহানগরীর পাঁচটি থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সাবেক বিএনপির ব্যানারে খুলনা বিএনপির নামে যারা নগরীতে চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে যারা নির্যাতন, নিপিড়ন জুলুম করেছে; যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান নেতারা।
এ সময় খুলনার আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ফকরুল আলম, তরিকুল ইসলাম জহির, স. ম. আ. রহমান, সৈয়দা রেহেনা ঈসা, অ্যাডভোকেট নুরুল হাসান রুবা, কাজী মাহমুদ আলী, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান প্রমুখ ।
সভা শেষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও মরহুম আরাফাত রহমান কোকো এবং চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় মোনাজাত করা হয়।