কারা বিভাগে শিগগিরই ৩১০৭ জনবল নিয়োগ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, কারাগার বিচার ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। কারা বিভাগের জনবল সংকট নিরসনে শিগগিরই নতুন তিন হাজার ১০৭ জনবল নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে এ নিয়োগের অনুমোদন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমি আশা করি অচিরেই এ সমস্যা সমাধান হবে।
আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ৪৮তম কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী। এ সময় তিনি শৃঙ্খলা ও মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কারানিরাপত্তায় আধুনিকায়নে বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কিনতে সম্প্রতি ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। আগামী অর্থ বছরে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
কারারক্ষীদের উদ্দেশে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, অপরাধমুক্ত সমাজ গঠন আমাদের সবার প্রত্যাশা। কারাভ্যন্তর থেকে জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যাতে কোনো ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালাতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকবেন। কারাগারের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান, শৃঙ্খলা ও মানবিকতাকে প্রধান্য দিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করবেন। আধুনিক কারাব্যবস্থাপনায় একটি চৌকষ কারারক্ষীদল অপরিহার্য। আমি বিশ্বাস করি, মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে একটি চৌকষ বাহিনী হিসেবে প্রশিক্ষণলব্ধ জ্ঞান এবং আপনাদের ওপর অর্পিত গুরুদায়িত্ব আত্মবিশ্বাস ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করবেন। শান্তি শৃঙ্খলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন এবং দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে তৎপর বিভিন্ন গোষ্ঠীকে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, ৪৮তম কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের মৌলিক প্রশিক্ষণ কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজে ১৭৫ জন অংশ নেন। তাদের মধ্যে ১৭১ জন পুরুষ কারারক্ষী ও চারজন নারী কারারক্ষী রয়েছেন। ২০১৫ সালের ১৩ ডিসেম্বর ২৪ সপ্তাহব্যাপী ওই প্রশিক্ষণ শুরু হয়। প্রশিক্ষণ, শৃঙ্খলা, মানবতা, সংশোধন ও পুনর্বাসন এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ‘রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ’ ভিশন বাস্তবায়ন করতে কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের মৌলিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের মেয়াদ তিন মাস থেকে ছয় মাসে বৃদ্ধি করে প্রথমবারের মতো ৪৮ তম ব্যাচকে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশিক্ষণার্থী কারারক্ষীদের কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন।
মন্ত্রী কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২-এ কারাবন্দি পুনর্বাসন প্রশিক্ষণ স্কুলে আধুনিক আসবাবপত্র তৈরির কার্যক্রমও উদ্বোধন করেন এবং বন্দিদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে কারামহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপার মো. মিজানুর রহমান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ১-এর সুপার সুব্রত কুমার বালা, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার ২-এর সুপার প্রশান্ত কুমার বণিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়। মন্ত্রী প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্নকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ পাঁচজনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।