দুই সন্তান হত্যা : মাকে আসামি করে অভিযোগপত্র
রাজধানীর বনশ্রীতে দুই শিশুসন্তানকে হত্যার অভিযোগে মা মাহফুজা মালেক জেসমিনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লোকমান হেকিম এ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
৩ মার্চ ছেলেমেয়েকে হত্যার অভিযোগে জেসমিনের স্বামী আমান উল্লাহ বাদী হয়ে তাঁর স্ত্রীকে একমাত্র আসামি করে রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই দিনই জেসমিনকে আটক করে পুলিশ। এরপর তাঁকে দুই দফায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। রিমান্ডে নেওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে জেসমিন স্বীকারোক্তিমূল জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে জেসমিন বলেন, ‘আমি আমার দুই সন্তানকে নিজ হাতে হত্যা করেছি। ছেলেমেয়েদের শিক্ষা জীবন এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি হতাশায় ভুগছিলাম আর এই কারণেই তাদের খুন করেছি।’
মাহফুজা আরো বলেন, ‘আমার মেয়ে নুসরাত ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের (প্রধান শাখা) পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত আর হলি ক্রিসেন্ট (ইন্টারন্যাশনাল) স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারিতে পড়ত ছেলে আলভী। সন্তানদের স্কুলের পরীক্ষার ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকতাম আমি। এই দুশ্চিন্তা থেকেই ২৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে প্রথমে মেয়ে নুসরাতকে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করি। পরে ছেলে আলভিকে খাটের ওপর ঘুমন্ত অবস্থায় একইভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করি। হত্যার পর আমার সন্তানদের লাশের সামনে কিছু সময় কান্নাকাটি করি এবং স্বামী ও অন্যদের খবর দেই।’
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দুপুরে বনশ্রীর বাসায় দুই শিশুকে এক বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শিশু দুটির পরিবার থেকে প্রাথমিক অবস্থায় জানানো হয়েছিল, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা জানান, মা-বাবার বিবাহবার্ষিকী উপলক্ষে বনশ্রীর একটি চায়নিজ রেস্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর পর মৃত্যু হয় তাঁদের।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর কর্তৃপক্ষ জানায়, শিশু দুটির শরীরে আঘাতের দাগ রয়েছে। তাদের শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।