অপরাধী জামিন পেলে সাক্ষী ভয়ে আদালতে আসেন না
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল থেকে অপরাধীরা জামিন পেলে সাক্ষীরা ভয়ে আদালতে আসেন না বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
আজ সোমবার নিম্ন আদালতে আকস্মিক সফরের পর ঢাকা আইনজীবী সমিতির সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বিচারক, আইনজীবীদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমি আজকে আনঅফিশিয়ালি এসেছি। আমি আসার সময় আমার সিকিউরিটিকেও বলিনি যে, জজকোর্টে যাচ্ছি। আজকে সারপ্রাইজড ভিজিটে এসেছি। আমি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে সিএমএম (মুখ্য মহানগর হাকিম) আদালতের হাজতখানায় গিয়ে মর্মাহত হয়েছি। সেখানে নারীদের যে হাজতখানা, সেখানে চার নারী আসামিসহ চার শিশু রয়েছে। শিশুগুলো কোনো অপরাধী না। আমি দায়িত্বপ্রাপ্তদের জিজ্ঞেস করেছি, শিশুগুলো অপরাধী কি না। এ শিশুরা অপরাধী না হয়েও হাজতখানায় কেন। তারা আগামী ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, রাষ্ট্রপতি হতে পারে।’
সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘আমি সুপারিশ করব, হাজতখানার অপরাধীদের সঙ্গে যেন তারাও অপরাধী না হয়ে যায়। তাদের জন্য আলাদা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হোক।’ তিনি বলেন, ‘রাজধানীতে যে কোর্ট থাকবে তা আমরা বাইরে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে দেব। এ কোর্টগুলো দৃষ্টান্ত হবে। এখানে চুল পরিমাণ দুর্নীতির প্রশ্রয় দিতে দেব না।’
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অপরাধীরা যখন জামিনে যায়, তখন সাক্ষীরা আদালতে নিয়মিত আসেন না। তাঁরা ভয়ে থাকেন।’ তিনি বিচারকদের প্রতি এমন ধরনের অভিযোগ থাকলে জামিন বাতিল করার জন্য বলেন।
এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাক্ষীরা দীর্ঘদিন আদালতে না আসায় আসামিরা ভোগান্তিতে পড়েন। মামলার বিচারকাজ দীর্ঘায়িত হয়। এগুলো সংশ্লিষ্ট বিচারকদের আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।’
প্রধান বিচারপতির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার দিলজার হোসেন, প্রধান বিচারপতির বিশেষ কর্মকর্তা সাব্বির ফয়েজ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান, মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা, সি এম এম শেখ হাফিজুর রহমান, সি জে এম জেসমিন আরা, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব রহমান।
এর আগে সকাল ১০টায় এস কে সিনহা ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাসে এসে ঘণ্টাব্যাপী মামলা পরিচালনা দেখেন।