শুনেছি আমিই টার্গেট ছিলাম, বললেন শোলাকিয়ার ইমাম
বরাবরের মতো এবারো বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ ঈদ জামাত কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ইমামতি করার কথা ছিল মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদের। গত ১০ বছর ধরেই তিনি এ জামাতে ইমামতি করছেন। আজ সেই উদ্দেশেই সকালে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ গিয়ে পৌঁছান তিনি। কিন্তু হামলার পর তিনি আর নিরাপত্তার কারণে মাঠে যাননি।
মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ যিনি সাম্প্রতিক সময়ে ইমামদের নিয়ে সারা দেশে জঙ্গিবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছেন এবং তাদের মধ্যে লক্ষাধিক ইমাম গত মাসে দেওয়া এক সম্মিলিত ফতোয়ায় বলেছেন, ইসলামের নামে পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ ‘ইসলামবিরোধী’।
বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাওলানা মাসউদ বলেছেন, ‘আমি সবসময় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। আমার পুরো ইমেজটাই আমি শান্তির জন্য ব্যয় করেছি। তাই এটা অসম্ভব নয় যে, তারা আমাকে টার্গেট করবে বা করছে।’
শোলাকিয়ার ইমাম আরো বলেন, ‘এটা শুনেছি যে, যারা ধরা পড়েছে এ কথাটাও তারা উল্লেখ করেছে যে, আমি তাদের টার্গেট ছিলাম এবং আছি।’
দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান ফরিদউদ্দিন মাসউদ।
এদিকে আজ হামলার পর বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শোলাকিয়া ঈদ জামাতের ইমাম বলেন, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রকৃতিগতভাবে যে সামাজিক প্রতিরোধ রয়েছে তা দুর্বল করার লক্ষ্যে একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে- মানুষের মনে ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে উগ্রবাদের বিরুদ্ধে যে সামাজিক প্রতিরোধ রয়েছে তা দুর্বল করা।
মাওলানা মাসুদ ভীত না হওয়ার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সেটা জঙ্গিদের লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।’ অন্যদিকে, ‘জঙ্গিদের মূলোৎপাটনের জন্য এ মুহূর্তে সামাজিক প্রতিরোধ খুব গুরুত্বপূর্ণ’ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘জঙ্গিদেরবিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত সামাজিক প্রতিরোধই বর্তমানে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’
পাশাপাশি, যেসব তরুণ বেহেশত পাওয়ার জন্য সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, ‘সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী’ সেই পথ শিগগির ছেড়ে আসার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানান শোলাকিয়ার ইমাম।
মাওলানা মাসুদ বলেন, ‘তোমরা বিভ্রান্ত হয়েছ, এটা ইসলামবিরোধী। স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে আমি তোমাদেরকে অনুরোধ করছি, তোমরা শিগগিরই সহিংসতা ও উগ্রবাদের পথ ছেড়ে দাও এবং স্বাভাবিক সামাজিক জীবনে ফিরে আস।’