জালিয়াতির অভিযোগে এক মাসে লাখ সিম জব্দ
আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে সিম জালিয়াতির ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। জালিয়াতি প্রতিরোধে চলছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধড়পাকড়। গত এক মাসে জালিয়াতির এমন ঘটনায় জব্দ হয়েছে কয়েক লাখ সিম। আটক হয়েছে বাংলালিংকসহ অন্য অপারেটরের কয়েকজন পরিবেশক।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বলছে, সিম জালিয়াতির অভিযোগে বাংলালিংকসহ অন্য অপারেটরের বিরুদ্ধে জরিমানা করা হবে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে ১৪ হাজার সিম নিবন্ধনের সন্ধান পেলে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে বাধ্যতামূলক করা হয় আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়া। নির্দিষ্ট সময়ে ১১ কোটি ৬০ লাখ সিম নিবন্ধন হলেও, বাইরে থেকে যায় আরো দেড় কোটি সিম। তার পরই দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বাংলালিংকসহ জব্দ করা হয় কয়েক লাখ সিম।
গতকাল রোববার অভিযানে চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার থেকে জব্দ করা হয় বিভিন্ন অপারেটরের লক্ষাধিক সিম। মাদারীপুরের অভিযানে আটক করা হয় এক পরিবেশকের কর্মীদের।
মাদারীপুরের বাংলালিংকের পরিবেশক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফর্মের নিচের দিকে শনাক্তকারীর নাম মোবাইল ফোন নম্বর ও আইডি নম্বর থাকে। ওটা সঠিকভাবে পূরণ করতে পারেনি আমাদের স্টাফ। কে বা কারা প্রশাসনকে এ বিষয়টি জানিয়েছে। প্রশাসন এসে দুইজনকে নিয়ে গেছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্যমতে, সাভারের আশুলিয়ায় বাংলালিংকের একটি আউটলেট থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের বিপরীতে সর্বোচ্চ ১৮টি ছাপ নিয়ে সিম জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বারবার তাদের আঙুলের ছাপ নিয়ে অন্য সিমের নিবন্ধন করেছে বাংলালিংকের স্থানীয় পরিবেশক।
আশুলিয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে ক্যামেরার সামনে কথা না বলে বাংলালিংক ই-মেইলের মাধ্যমে জানিয়েছে, এটা পুরনো ইস্যু। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এরই মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে।
আর নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি বলছে এর দায় এড়াতে পারে না অপারেটররা। কোনো প্রতিষ্ঠানের নিচের পর্যায়ের কেউ কিছু করলে তার জন্য ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে।
সিম নিবন্ধনের শেষ সময়ের আগে, রাস্তা-অলি-গলিতে যেভাবে সিম নিবন্ধন হয়েছে, তাকে অগোছালো ও অপরিকল্পিত বলে বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেছেন, এর সুযোগ নিয়েছে অপারেটর ও অসাধু ব্যবসায়ীরা।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক বলেন, ‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে যে রেফারেন্স থাকে তার সঙ্গে সে যেটার কনফর্ম করল তা মিলিয়ে নিতে হবে। এর কনফারমেশনটা গ্রাহকের কাছে দিতে হবে। তাহলে গ্রাহক সন্তুষ্ট হবে।’