এখন তাঁদের কী হবে
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের দুই মামলায় ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং নয়জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। কিন্তু দণ্ড কার্যকরের আগে এখন তাদের সামনে রয়েছে উচ্চ আদালতে আপিল করার আইনি সুযোগ। আর পলাতক আসামিদের কী হবে? আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন চাঞ্চল্যকর এ মামলার আদেশ দেন। আদেশের পর মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যুপরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাজার পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানো হয়েছে এ মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদেরও। এ ছাড়া পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। রায়ে বলা হয়েছে, আসামিরা যেদিন থেকে গ্রেপ্তার হবেন সেদিন থেকে তাদের দণ্ডাদেশ কার্যকর হবে।
দণ্ডাদেশ কার্যকরের আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অজিত শীল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী বিচারিক আদালত কোনো আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিলে ৬০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে হয়। আর এই সময়ে আপিল না করলে কারা কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় রায় কার্যকর করতে পারবে।
অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিপক্ষ বা রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে তা গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য রাখা হয়। আদালত শুনানি শেষে তা গ্রহণ করলে শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে দেওয়া হয়।’
অজিত শীল আরো জানান, এ ছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের সাজা দেওয়ার দিন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে উচ্চ আদালতে আপিল করতে হবে। আপিল করার পর তা নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি হবে। আর এর মধ্যে আসামিদের কারাগারে থাকতে হবে। তবে এর মধ্যে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা যায়।
রায়ের নথি অনুযায়ী, এ মামলার মোট ৩৫ আসামির মধ্যে যে ২৬ জন ফাঁসির দণ্ডাদেশ পেয়েছেন তাঁরা হলেন- নূর হোসেন, মো. মিজানুর রহমান দীপু, চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, চাকরিচ্যুত মেজর মো. আরিফ হোসেন, চাকরিচ্যুত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম এম রানা, মো. মোখলেছুর রহমান, মো. মহিউদ্দিন মুন্সী, ল্যান্স নায়েক হিরা মিয়া, সিপাহি আবু তৈয়ব, সেলিম, সানাউল্লাহ সানা, শাহ জাহান, জামাল উদ্দিন, আসাদুজ্জামান নূর, পূর্ণেন্দু বালা, আরওজি আরিফ হোসেন, সৈনিক আল আমিন, তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবির, বেলাল হোসেন, শিহাব উদ্দিন, মোর্তুজা জামান চার্চিল, আলী মোহাম্মদ, আবুল বাশার, রহম আলী ও এমদাদুল হক।
প্রধান আসামি নূর হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন।
এই ২৬ জনের মধ্যে পলাতক রয়েছেন নয়জন। তাঁরা হলেন- মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান, সৈনিক মহিউদ্দিন মুনসী, সৈনিক আল আমিন, সৈনিক তাজুল ইসলাম, সার্জেন্ট এনামুল কবির, নূর হোসেনের সহযোগী সেলিম, সানাউল্লাহ ছানা, ম্যানেজার শাহজাহান ও ম্যানেজার জামাল উদ্দিন।