বিশিষ্টজনদের পরামর্শ শুনল সার্চ কমিটি
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে নাম সুপারিশ করার জন্য গঠিত সার্চ কমিটি আজ বিকেলে বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। এ সময় কমিশন গঠনের জন্য বিশিষ্টজনদের পরামর্শ শোনেন তাঁরা।
বিকেল ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে কমিটির সঙ্গে বিশিষ্ট নাগরিকদের মতবিনিময় শুরু হয় বলে জানান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্তি রেজিস্ট্রার (বিচার ও প্রশাসন) সাব্বির ফয়েজ। তিনি জানান, বৈঠকটি প্রায় দুই ঘণ্টা চলে। বৈঠকে আমন্ত্রণ পাওয়া ১২ জন বিশিষ্ট নাগরিকই উপস্থিত ছিলেন।
এঁরা হলেন সাবেক বিচারপতি মো. আবদুর রশিদ, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ টি এম শামসুল হুদা, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন ও ছহুল হোসাইন, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ কে আজাদ চৌধুরী, এস এম এ ফায়েজ, মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) নুরুল হুদা।
অপরদিকে সার্চ কমিটির চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) চেয়ারমান ড. মোহাম্মদ সাদিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিরীণ আকতার ও মহা-হিসাব নিরীক্ষক মাসুদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশিষ্টজনরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। সেগুলো আমরা রেকর্ড করে রেখেছি। তাঁদের প্রস্তাবগুলো একত্র করে বিবেচনায় নেওয়া হবে।’
এ ছাড়া কমিটি আগামী ১ ফেব্রুয়ারি আরো পাঁচ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে কথা বলবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে।
বৈঠক শেষে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন জানান, তিনি নির্বাচন কমিশন গঠনের ব্যাপারে নিজে লিখিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মূল কথাটা হচ্ছে ওনারা এমন লোক সিলেক্ট করুন যাদের ওপর মানুষের আস্থা থাকবে। রাজনৈতিক দলের আস্থা থাকবে, যারা একটি ইফেক্টিভ ইলেকশন কমিশন করতে পারবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে অত্যন্ত আশাবাদী। বল এখন ওনাদের কোর্টে। আমাদের যা বলার আমরা বলেছি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘আমরা প্রজ্ঞাপনে যে কথা আছে তার ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে, সংবিধানে যে কথা আছে, তার ভিত্তিতে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে কী রকম গুণসম্পন্ন লোকেরা আসলে ভালো হয় সেগুলোই এখানে আলোচনা হয়েছে। আমরা কেউ কেউ আইন প্রণয়নের প্রশ্নে গুরুত্ব দিয়েছি। বলেছি, এখনো সময় আছে। আইন তৈরি করা যায়। নির্বাচন কমিশন যদি এক মাস বা দুই মাস না থাকে কোনো কাজ আটকে থাকবে না। সময় নিয়ে হলেও আইন করার সুযোগ আছে।’
মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, কমিটি নিয়ে আস্থার সংকট থাকলে এ নিয়ে এগুনো যাবে না।
এ ছাড়া এ নিয়ে গণশুনানির পরামর্শ দিয়েছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।