ইডিসিএলে উৎপাদন কর্মী হিসেবে নিয়োগ পেলেন শিমুলের স্ত্রী
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত দৈনিক সমকালের সাংবাদিক আবদুল হাকিম শিমুলের স্ত্রী নূরুন নাহার চাকরি পেয়েছেন।
বুধবার বিকেলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান এসেন্সিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডে (ইডিসিএল) শিমুলের স্ত্রী নূরুন নাহারকে উৎপাদন কর্মী পদে চাকরি দেয়।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ইডিসিএল কার্যালয়ে গিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ডা. এহসানুল কবির জগলুলের কাছ থেকে নূরুন নাহারের পক্ষে নিয়োগপত্রটি গ্রহণ করেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর-এনায়েতপুর) আসনের সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন।
শুক্রবার এমপি স্বপন নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রীর হাতে নিয়োগপত্রটি পৌঁছে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুর পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরুর পক্ষের সঙ্গে ছাত্রলীগের একাংশের সংঘর্ষে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে গুলিতে গুরুতর আহত হন সাংবাদিক শিমুল। পরদিন বগুড়া থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।
এরপর সাংবাদিক শিমুলের বাড়ি গিয়ে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। এ সময় তিনি নিহতের স্ত্রীর কাছে নগদ এক লাখ টাকা সহায়তা দেন। পাশাপাশি ইডিসিএলে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। সেই প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বুধবার বিকেলে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান (ইডিসিএল) চাকরির নিয়োগপত্র নূরুন নাহারের পক্ষ থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপনের কাছে তুলে দেন।
এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা শিমুলের পরিবারের হাতে নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং শিমুলের সন্তানদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিয়েছেন।
সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর-এনায়েতপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য চয়ন ইসলাম সাংবাদিক শিমুলের দুই ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার করে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এস. এম. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যম কর্মীদের জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই উল্লাপাড়া পৌরসভা থেকে নিহত শিমুলের স্ত্রীর হাতে আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেবেন।
দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার ছেলে সাদিক শাহজাদপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও মেয়ে তামান্না স্থানীয় একটি কেজি স্কুলে নার্সারিতে পড়াশোনা করে। নানির দেওয়া চার শতক জমিতে ভিটেবাড়ি ও একটি টিনের ঘর ছাড়া শিমুলের আর কোনো সহায়-সম্পদ ছিল না। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বর্গাজমি চাষাবাদ করতেন।