কাদের খান জাতীয় পার্টির কেউ না : এরশাদ
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল ডা. মো. আবদুল কাদের খান জাতীয় পার্টির কেউ নন। এমনটিই দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
আজ বুধবার রংপুর পর্যটন মোটেলে উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা ও দুই মহানগরে জাতীয় পার্টির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন দাবি করেন এরশাদ।
গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি ও দলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাদের খান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, ‘উনি আমাদের সঙ্গে তিন বছর ধরে যোগাযোগ করেন না। সাবেক এমপি ছিলেন। তিন বছর ধরে যোগাযোগ নাই। এখন তিনি আমাদের দলের কেউ না। ছিলেন এককালে।’
এই পাশ থেকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘একসময় ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তিন বছর আগে এমপি ছিলেন। এখন তিনি (আবদুল কাদের খান) আমাদের দলের কেউ না। তিনি আমাদের সময় যখন ছিলেন, তখন তাঁকে আমরা ভালোই দেখেছি। এখন এটা তদন্ত চলছে। বিষয়টি পুলিশ রিপোর্ট দেবে। কী হয় আমরা অপেক্ষা করব, আমরা জানব। এখন আগাম কিছু বলা যাচ্ছে না।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যরা।
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. কর্নেল (অব.) আবদুল কাদের খান গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম ছাপরহাটি (খানপাড়া) গ্রামে। তিনি পরিবারসহ বগুড়া জেলা শহরের রহমাননগরের চারতলা বাসভবনে থাকেন। ওই বাসভবনে গরীব শাহ নামে তাঁর একটি ক্লিনিক রয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে কাদের খান জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পাননি। সেখান থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে শাহবাজ (মাস্টারপাড়া) এলাকায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে ১ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন।
ওই হত্যা মামলায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়ার বাসা থেকে আবদুল কাদের খানকে গ্রেপ্তার করে গাইবান্ধার পুলিশ। এর আগে ওই দিন ভোরে একই হত্যা মামলায় কাদের খানের ভাতিজা, গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন রাতে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে গাইবান্ধার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। হত্যা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাদের খানকে আজ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক। ডিআইজি দাবি করেন, ক্ষমতার উচ্চাভিলাষী লোভ এবং আবার সংসদ সদস্য (এমপি) হওয়ার জন্য এমপি লিটনকে হত্যা করা হয়। এক বছর ধরে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাবেক এমপি আবদুল কাদের খান। তাঁর অর্থায়নে এমপি লিটনকে হত্যা করা হয়। এমনকি খুনিদের নানা ধরনের আর্থিক সহযোগিতা করে তাদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন কাদের খান।