এমপি লিটন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কর্নেল কাদের
সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল কাদের খানের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন হান্নান, মেহেদী, শাহীন ও রানা।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাইবান্ধা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি করেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক।
সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি বলেন, সুন্দরগঞ্জের সরকারদলীয় এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী একই আসনের জাতীয় পার্টির (এরশাদ) সাবেক এমপি কর্নেল কাদের খান। একটি ছিনতাইয়ের ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করতে পেরেছে।
ডিআইজি আরো বলেন, এমপি লিটন হত্যাকাণ্ডে খুনিদের ভাড়া করেছিলেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসক কাদের খান। তাঁর পরবর্তী টার্গেট ছিল একই আসনের জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী শামীম হায়দার পাটোয়ারী। মূলত সুন্দরগঞ্জ আসনে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ের জন্য এমপি লিটনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
ডা. কাদের খান চারজন ‘কিলার’ আবদুল হান্নান, মেহেদী হাসান, শাহীন মিয়া ও রানা মিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে লালনপালন করে আসছেন বলেও জানান ডিআইজি। তাঁদের মধ্যে আবদুল হান্নান আটক এমপি কাদের খানের ব্যক্তিগত গাড়িচালক, শাহীন এমপির ভাতিজা ও মেহেদী তাঁর বাড়ির কাজের লোক। রানা ছাড়া বাকি তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
মামলার অপর আসামি রানা মিয়াকে পুলিশ নজরবন্দি করে রেখেছে বলেও জানান ডিআইজি। যেকোনো মুহূর্তে তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
ডা. আবদুল কাদের খান গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ আসনের জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি। তাঁর বাড়ি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খানপাড়া) গ্রামে।
তিনি পরিবারসহ বগুড়া জেলা শহরের গরীব শাহ ক্লিনিকের চারতলা ভবনের ওপর তলায় বসবাস করতেন। মঙ্গলবার বিকেলে গাইবান্ধা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁকে আটক করে।
গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নে শাহবাজ (মাস্টাপাড়া) এলাকায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। এ ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাত চার-পাঁচজনকে আসামি করে ১ জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এ পর্যন্ত আবদুল কাদের খানসহ ১১০ জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে ২৪ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।