সীতাকুণ্ডে দুই ‘জঙ্গি আস্তানা’য় অভিযান চলছে, দম্পতি আটক
চট্টগ্রামের সিতাকুণ্ড উপজেলার আমিরাবাদ ও কলেজ রোড এলাকায় দুটি জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সর্বশেষ খবর পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেসব জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে।
আজ বুধবার বিকেলে আস্তানা দুটির একটি থেকে সন্দেহভাজন জঙ্গি দম্পতিকে আটকের কথা জানানো হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন হলেন জসিম।
প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ৪ মার্চ আমিরাবাদ এলাকার সাধন কুটির নামে বাড়িতে ভাড়া ওঠেন জসিম ও এক নারী। তাঁরা নিজেদের স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দেন। ভাড়া নেওয়ার পর থেকে তারা ঘরের দরজা-জানালা সবসময় বন্ধ রাখতেন। এতে সন্দেহ হয় বাড়িওয়ালা সুভাষ চন্দ্র দাশ ও তাঁর স্ত্রী ছবি রানী দাশের। তাঁরা গতকাল মঙ্গলবার ওই বাড়িতে যান টাইলসের মেরামত করার জন্য। এ সময় তাঁরা নিচতলায় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী দেখেন। এতে তাঁদের আরো সন্দেহ হয়। তাঁরা জসিম ও তাঁর স্ত্রী জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন এগুলো ভুয়া। এরপর আজ দুপুরের তাঁদের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন। এরপর তাঁরা ঘর বন্ধ করে রাখেন।
বাড়িওয়ালা সুভাষ চন্দ্র দাশ বলেন, ‘আমার স্ত্রী, বন্ধুবান্ধব, প্রতিবেশীদের নিয়ে আমরা তাদের চ্যালেঞ্জ করি। তাঁরা আমাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। আমরা তাঁদের ধরে ফেলি এবং পুলিশের কাছে সোপর্দ করি।’
ছবি রানী দাশ বলেন, ‘ওই নারীর কোমরে বেল্ট বাঁধা ছিল। তিনি হামলা চালানোর চেষ্টা করলে আমি তাকে জাপটে ধরি।’
প্রতিবেশী সুনন্দ ভট্টাচার্য সাগর বলেন, দম্পতিকে আটক করার সময় ধস্তিধস্তি হয়। এসময় তাঁর শার্ট ছিড়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড মডেল থানার পরিদর্শক মাহবুব মিল্কী বলেন, ওই বাড়িটিতে গোলাবারুদ, গ্রেনেড থাকতে পারে। বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এসে কাজ করছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শিগগিরই এখানে আসবেন।
এদিকে, সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার উদ্দিন জানান, প্রায় একই সময়ে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ কলেজ রোডের ছায়ানীড় নামের আরেক বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে। এ সময় বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালায় জঙ্গিরা। বিকেল ৪টার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছে।
সম্প্রতি কুমিল্লায় একটি বাসে তল্লাশির সময় পুলিশের দিকে বোমা ছোড়ার ঘটনায় দুই জঙ্গিকে আটক করা হয়। পরে এঁদের একজনকে নিয়ে ওই রাতেই চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ২৯টি হাতবোমা, ৪০টি বিস্ফোরক জেলসহ বিপুল বিস্ফোরক।