রায়ে সন্তোষ প্রকাশ রাজনের বাবার
ছেলে রাজন হত্যায় প্রধান আসামি কামরুলসহ চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাবা শেখ আজিজুর রহমান আলম।
আজ মঙ্গলবার চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি নূর মিয়ার সাজা কমিয়ে তাঁকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি শেষে এ রায় ঘোষণা করেন।
এরপর রাজনের বাবা আজিজুর রহমান বলেন, বিচারকদের প্রতি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, দ্রুত ফাঁসি কার্যকর হবে। আমার ছেলেকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, আর কারো সন্তান যেন এ রকম হত্যার শিকার না হয়।’
২০১৫ সালের ৮ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলায় আসামি কামরুলসহ চারজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আদালত। ওই সময় একজনকে যাবজ্জীবন ও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বেকসুর খালাস দেওয়া হয় তিনজনকে।
ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়া চারজন হলেন- মামলার প্রধান আসামি সিলেটের জালালাবাদ থানাধীন শেখপাড়া গ্রামের কামরুল ইসলাম, পীরপুর গ্রামের সাদিক আহমদ ময়না ওরফে ময়না চৌকিদার, শেখপাড়ার তাজ উদ্দিন বাদল ও সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের জাকির হোসেন ওরফে পাভেল। এর মধ্যে জাকির হোসেন ওরফে পাভেল বর্তমানে পলাতক। আদালত জালালাবাদ থানাধীন পূর্ব জাঙ্গাইল গ্রামের নূর মিয়া ওরফে নূর আহমদকে যাবজ্জীবন, শেখপাড়ার দুলাল আহমদকে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। লাশ গুমের চেষ্টার দায়ে আসামি কামরুলের ভাই শেখপাড়ার মুহিদুল ইসলাম মুহিত, আলী হায়দার ও শামীম আহমদকে সাত বছর করে এবং সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার জাহাঙ্গীরগাঁও গ্রামের আয়াজ আলীকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। তাঁদের মধ্যে আসামি শামীম আহমদ পলাতক।
বেকসুর খালাস পান জালালাবাদ থানাধীন হায়দরপুর গ্রামের রুহুল আমীন, কুমারগাঁওয়ের আজমত উল্লাহ ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার দক্ষিণ কুর্শি ইসলামপুর গ্রামের ফিরোজ আলী।
গত ১২ মার্চ মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের করা আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষ হয়। গত ৩০ জানুয়ারি রাজন হত্যা মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু হয়। গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজন হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায়। পরে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পেপারবুক প্রস্তুত করা হয়।
২০১৫ সালের ৮ জুলাই চুরির অপবাদে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের কুমারগাঁও বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন শেখপাড়ায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয় সিলেটের জালালাবাদ থানা এলাকার বাদেয়ালি গ্রামের সবজি বিক্রেতা শিশু রাজনকে। লাশ গুম করার সময় ধরা পড়ে একজন।
পরে পুলিশ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় মামলা করে। ফেসবুকে প্রচারের উদ্দেশে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র ধারণ করে নির্যাতনকারীরা।