আমার ফোন রিসিভ করছে না সানি : নাসরিন
সমঝোতা করে নারী নির্যাতনের মামলায় জামিন পাওয়ার পর থেকে ক্রিকেটার আরাফাত সানি কোনো যোগাযোগ করছেন না বলে দাবি করেছেন তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নাসরিন সুলতানা।
আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আরাফাত সানির জামিন শুনানিকালে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এই কথা বলেন নাসরিন।
‘আরাফাত সানি জামিন নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। তাকে ফোন দিলে, সে ফোন রিসিভ করে না। এরপর একদিন আমি তার বাসায় গেলে তার মা নার্গিস আক্তার আমাকে মারধর করেন। সে আমার সঙ্গে একটি দিনও কাটাচ্ছে না’, বলেন নাসরিন।
নারী নির্যাতনের মামলায় আরাফাত সানি জামিনের মেয়াদ শেষ হয় আজ। জামিনের মেয়াদ বাড়াতে আজ ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে হাজির হন সানি। সেই সময় শুনানিকালে মামলার বাদী নাসরিন আদালতে সানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
নাসরিন বলেন, ‘আরাফাত সানির আগে বিয়ে ছিল। সেটা আমি জানতাম না। তার সঙ্গে যখন আমি দেশের বাইরে ঘুরতে যাই, তখন তার পাসপোর্টে অবিবাহিত লেখা ছিল। সে আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। আমি তার জামিন নামঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।’
ওই সময় প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাঁকে ঘরে তুলে নিতে সানির প্রতি আহ্বান জানান নাসরিন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানির আইনজীবী এম জুয়েল আহম্মেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন সানি। শুরুতে এ মামলায় জামিন নাকচের বিষয়ে নাসরিন আদালতে বক্তব্য দেন। পরে আমরা জামিন দেওয়ার পক্ষে আদালতকে বলি।’
এম জুয়েল জানান, শুনানিতে তিনি বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘নারী নির্যাতনের মামলায় এ আদালত থেকে আরাফাত সানির নেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমরা আজ তাঁর আবার জামিনের প্রার্থনা জানাচ্ছি।’
‘আরাফাত সানির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সত্য নয়। তা ছাড়া আরাফাত সানি বর্তমানে লিগে খেলছেন। সেখানে তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়েছেন। এ অবস্থায় তাঁর জামিন মঞ্জুর প্রয়োজন।’
এম জুয়েলের ভাষ্য অনুযায়ী, শুনানিতে আরো বলা হয়, ‘নাসরিন সুলতানার সঙ্গে সানির সংসার হোক, আমরা সেটাই চাচ্ছি। এ জন্য তাঁকে আলাদা ফ্ল্যাট ভাড়া করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সেখানে থাকছেন না। তিনি সানির প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিতে বলছেন। কিন্তু এটা সম্ভব না। কারণ নাসরিন সুলতানা আরাফাত সানির প্রথম স্ত্রীর কথা জেনে-শুনেই তাঁকে বিয়ে করেছেন। এখন সানির প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিলে তিনিও মামলা করবেন। আরাফাত সানি এখন দুই স্ত্রীকেই রাখতে চাচ্ছেন।’
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক সানিকে ৬ জুলাই পর্যন্ত জামিন দেন এবং ওই তারিখের মধ্যে আরাফাত সানি এবং নাসরিন সুলতানার মধ্যে সমঝোতার পরামর্শ দেন।
গত ২২ জানুয়ারি সকালে ঢাকার আমিনবাজার এলাকা থেকে সানিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় একদিনের রিমান্ড ভোগ করেন তিনি। এরপর নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা এবং তথ্য প্রযুক্তি মামলায় জামিন পান সানি।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি নাসরিন সুলতানা নামের এক তরুণী সানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তাঁর দাবি, সানির সঙ্গে তাঁর বৈবাহিক সম্পর্ক আছে। তাঁদের অন্তরঙ্গ কিছু ছবি সানি ফেসবুকসহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেন।