ফুলের টব নয়, টিয়ার শেলেই গেছে সিদ্দিকুরের চোখ
ছুড়ে মারা ফুলের টব রাজধানীর তিতুমীর কলেজের ছাত্র সিদ্দিকুরের চোখে আঘাত করেছে বলে পুলিশের এক কর্মকর্তা দাবি করলেও পুলিশেরই এক তদন্ত প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে, সেদিন খুব কাছ থেকে আন্দোলনকারীদের দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল মারা হয়েছিল। আর এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। আজ সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে এ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির প্রধান যুগ্ম কমিশনার মীর রেজাউল আলম।
গত ২০ জুলাই বেলা ১১টার দিকে রুটিনসহ পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা শাহবাগে অবস্থান নেন। পুলিশের বেঁধে দেওয়া আধা ঘণ্টা সময়ের পরও অবস্থান চালিয়ে গেলে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে ও লাঠিপেটা করে পুলিশ। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট সিদ্দিকুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থীর চোখে বিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করেন সহপাঠীরা। সে সময়কার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশের ছোড়া টিয়ার শেলে রাজপথে পড়ে যান সিদ্দিকুর। তাঁর চোখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় এক হাজার ২০০ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যাচেষ্টা মামলার বাদী উপপরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আন্দোলনকারীদের ছোড়া ফুলের টবের আঘাতে সিদ্দিকুর রহমানের দুই চোখে আঘাত লেগেছে।
তবে আজকের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খুব কাছ থেকে ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল সিদ্দিকুরের চোখে লেগেছে। গত ২০ জুলাই শাহবাগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দায়িত্বরত থানার পুলিশ ও দাঙ্গা দমন বিভাগের পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলা ছিল বলেও প্রতিবেদনে জানানো হয়।
তদন্তে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক আবু জাফর আলী বিশ্বাস, পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদসহ দাঙ্গা দমন বিভাগের পাঁচ কনস্টেবল।
এ ছাড়া এ ঘটনায় পুলিশের রমনা বিভাগের গঠন করা তদন্ত কমিটিরও দু-একদিনের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
আহত সিদ্দিকুর বর্তমানে ভারতের চেন্নাইয়ের শংকর নেত্রালয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।