‘আস্তানায়’ আছে ৭ জন, ‘জঙ্গি আবদুল্লাহ’কে আত্মসমর্পণের আহ্বান
রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকায় বাঁধন রোডের যে ছয়তলা বাড়িটি জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে গতকাল মধ্যরাতের পর থেকে ঘিরে রেখেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), সেখানে অন্তত সাতজন অবস্থান করছে বলে ধারণা করছে পুলিশের এই এলিট ফোর্স।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার পর র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ ঘটনাস্থলের কাছে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জঙ্গি আবদুল্লাহ বাড়িটি ভাড়া নিয়ে আস্তানা তৈরি করে। সেখানে আবদুল্লাহ, তাঁর দুই স্ত্রী, দুই সহযোগী, দুই সন্তানসহ সাত জঙ্গি অবস্থান করছে। আবদুল্লাহর বড় ছেলের বয়স ১০ বছর আর ছোট ছেলের আড়াই বছর। আমরা তাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাইকে অক্ষত অবস্থায় বের করে আনতে চায়। আর এ কারণেই অভিযানে দেরি হচ্ছে বলেও জানান র্যাবপ্রধান। তিনি আরো জানান, অভিযান শুরু হলে জানানো হবে।
এলাকাবাসী জানান, যে বাড়িটিতে অভিযান চলছে, সেই বাড়িটির নম্বর ২/৩/বি। এর মালিক টিঅ্যান্ডটির কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজাদ। বাড়িটির নাম ‘কমলপ্রভা’। আজাদ সাহেব নিজে স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলায় থাকেন।
গণমাধ্যমকে বেনজীর আহমেদ জানান, আজ ভোর ৪টা থেকেই ‘জঙ্গি’ আবদুল্লাহর সঙ্গে মোবাইল ফোনে তাঁদের যোগাযোগ হচ্ছে। তিনি বলেন, “আবদুল্লাহ এই বাসায় ১০-১২ বছর ধরে আছে। এখানে ছাদে সে কবুতর লালন-পালনের ব্যবসা করেন। পাশাপাশি আইপিএস, ইউপিএস বানিয়ে বিক্রি করেন। এসব বানাতে প্রচুর এসিড ও পেট্রলের প্রয়োজন হয়। মূলত এর আড়ালেই আবদুল্লাহ এই ‘আস্তানায়’ প্রচুর বিস্ফোরক জমা করেন।”
‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আবদুল্লাহর সঙ্গে কথা বলে, সেখানে ৫০টির মতো আইইডির থাকতে পারে বলে ধারণা করছে। এ ছাড়া সেখানে ছোট ছোট পিস্তলও থাকতে পারে।’
এর আগে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানিয়েছিলেন, টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা মসিন্দা এলাকার বাড়ি থেকে দুই সহোদর মাছুম ও খোকনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে খোকন কম্পিউটারে খুবই পারদর্শী। তারা অত্যাধুনিক ড্রোন তৈরি করেছে। এই ড্রোনের মাধ্যমে তারা বড় ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল।
টাঙ্গাইলের ঘটনার ‘ফলোআপ’ হিসেবেই মিরপুরের অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান র্যাবপ্রধান। তিনি আরো জানান, আব্দুল্লাহ একজন ‘দুধর্ষ জঙ্গি’। তিনি ২০০৫ সাল থেকে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত।
যে বাড়িটিতে অভিযান চালানো হচ্ছে, সেই বাড়িটিতে ২৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এর মধ্যে একটি ফ্ল্যাটে আবদুল্লাহ পরিবার নিয়ে আছেন। বাকি ২৩টি ফ্ল্যাট থেকে বিভিন্ন সময়ে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৬৫ জনকে উদ্ধার করেছে।
র্যাব মহাপরিচালক জানান, ‘জঙ্গিদের’ সবাইকে আত্মসমর্পণের জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাদের অক্ষত বের করার চেষ্টা হচ্ছে। যদি তারা র্যাবের আহ্বানে সাড়া না দেয়, তাহলে আইনগতভাবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অভিযান শুরু হলে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।