নির্বাচনী হাওয়া যত দেরীতে বইবে ততই মঙ্গল : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেছেন, দেশে নির্বাচনী হাওয়া যত দেরীতে বইবে ততই মঙ্গল। এ ছাড়া দেশের ব্যাংক খাতের সংস্কার ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠন এ সরকারের আমলে আর হচ্ছে না।
আজ শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বাজেটের বিভিন্ন দিক ও আকার নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
বিশাল এ বাজেট বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি কোনো বাধা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সাধারণত এপ্রিল মাসেই নির্বাচনী হাওয়া বইবার কথা। কিন্তু এখন জুন মাস চলে। এখনো জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো হাওয়া বইতে দেখছি না। তবে নির্বাচনী হাওয়া যত দেরীতে বইবে ততই মঙ্গল। সরকারের কর্মসূচি ও প্রকল্পগুলো সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে।
ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আরো আগে থেকেই একটি কমিশন গঠনের কথা বলে আসছিলেন অর্থমন্ত্রী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলনে, ‘আমি এ কমিশন গঠনের জন্য সব কাগজপত্র প্রস্তুত করেছি। তবে এটি আপাতত হচ্ছে না। পরবর্তী সরকার এসে এটি প্রয়োজন মনে করলে করবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা। এ ছাড়া মঞ্চের সামনে দর্শক গ্যালারীতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াসহ সরকারের পদস্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে আয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা। এ ছাড়া এনবিআরবহির্ভূত সূত্র থেকে কর রাজস্ব ধরা হয়েছে নয় হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। করবহির্ভূত খাত থেকে রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়নসহ অন্যান্য খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে দুই লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ধরা হয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে সার্বিক বাজেট ঘাটতি এক লাখ ২৫ হাজার ২৯৩ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। এ ঘাটতি অর্থায়নে বৈদেশিক সূত্র থেকে ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য ব্যাংকবহির্ভূত উৎস থেকে ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা সংস্থানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।