মেসি আলোয় উদ্ভাসিত আর্জেন্টিনা নকআউট পর্বে
আগের ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে তিন গোলে হেরে আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বে খেলার সম্ভাবনা একেবারেই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল। এবারের বিশ্বকাপে অনেকেই তাদের শেষটাও দেখে ফেলেছিল। কিছুটা সম্ভাবনা বাকি ছিল, নাইজেরিয়ার বিপক্ষে জিতলেই কেবল পরের পর্বে উঠবে তারা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ২-১ গোলে জিতেছে।
তাই 'ডি' গ্রুপ রানার্সআপ হয়েই শেষ ষোলোতে ওঠে আর্জেন্টিনা। তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়ে পরের পর্বে খেলা নিশ্চিত করে তারা। এই গ্রুপ থেকে তিন ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের পর্বে ওঠে ক্রোয়েশিয়া।
সেন্ট পিটার্সবার্গে অনুষ্ঠিত ম্যাচে মেসি আলোয় উদ্ভাসিত হয়েই পরের পর্বে ওঠে আর্জেন্টিনা। তিনি নিজে খেলেছেন, দলকে খেলিয়েছেন- তাই জিতেছে লাতিন আমেরিকার দলটি।
ম্যাচে অবশ্য আর্জেন্টিনার এগিয়ে যেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ম্যাচের ১৪ মিনিটে সময়ের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসির চমৎকার গোলে এগিয়ে যায় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
সতীর্থের ক্রস থেকে পাওয়া বল ধরে মেসি বক্সে ঢুকে চমৎকার শটে বল জালে জড়ান। নাইজেরিয়া গোলরক্ষক ঝাপিয়ে পড়েও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। পাশে থাকা এক নাইজেরীয় ডিফেন্ডার শতচেষ্টা করেও রুখতে পারেননি এই বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডকে।
দলের প্রয়োজনে মেসি যে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেটা তিনি আরেকবার দেখিয়েছেন। শুধু একটি গোল করেননি, বেশ কিছু সুযোগও তৈরি করে দিয়েছেন সতীর্থদের।
এক গোলে এগিয়ে আর্জেন্টিনা দারুণ উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে। সে ধারাবাহিকতায় ২৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। মেসির চমৎকার পাসে বক্সে ঢুকে গোলরক্ষকে একা পেয়েও জালে জড়াতে পারেননি বল।
আর্জেন্টিনার দুর্ভাগ্য ৩৩ মিনিটেও মেসির ফ্রি-কিক থেকে গোল না হওয়া। তাঁর অসাধারণ ফ্রি-কিক সাইডবারে লেগে ফিরে না আসলে গোল হতেও পারতো।
তবে গত দুটি ম্যাচের তুলনায় এদিন আর্জেন্টিনা যে দারুণ খেলছে সেটা বলাই যায়। পুরো ম্যাচে দারুণ আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে মেসির দল।
দ্বিতীয়ার্ধেও আর্জেন্টিনা ভালোই খেলছিল, কিন্তু মিডফিন্ডার জেভিয়ার মাচেরানোর একটি ভুলে আবার হতাশায় ডুবতে বসেছিল দলটি। বক্সের মধ্যে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়কে ফেলে দিলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজায়। পেনাল্টি থেকে ভিক্টর মসেস গোল করে নাইজেরিয়াকে খেলার সমতায় ফেরান (১-১)।
৮০ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন হিগুয়েইন। সতীর্থের ক্রসে গোলরক্ষকের সামনে বল পেয়েও ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দেন।
তবে ৮৬ মিনিটে সাফল্য পায় আর্জেন্টিনা। ডিফেন্ডার মার্কোস রোহোর লক্ষ্যভেদ করে দলকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় জয়ের উল্লাসে মেতে উঠে মেসির আর্জেন্টিনা।