কারাগারে ডিভিশন চেয়ে সাঈদীর রিট খারিজ
মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির সাঈদীর পক্ষে আবেদনের শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী মাসুদ রানা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ, মাসুদ আহমেদ পরাগ ও অমিত তালুকদার।
এর আগে সাঈদীর বড় ছেলে শামীম সাঈদীর পক্ষে ব্যারিস্টার তানভির আহমেদ আল আমিন গত ২৪ জুন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন করেন।
সাঈদীর আরেক ছেলে মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘জেল কোডের ১৯২ পৃষ্ঠার ১৫ নম্বর অধ্যায়ের ক্লাসিফিকেশন শিরোনামের অধীন ৬১৭ নম্বর বিধি অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর আমার বাবা ডিভিশন পাওয়ার অধিকারী। এসব বিষয় উল্লেখ করে আমরা জেল কর্তৃপক্ষ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর আবেদন করেছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর এখন প্রায় চার বছর হতে চলেছে, কিন্তু তাঁকে ডিভিশন দেওয়া হয়নি।’
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘২০১৫ সালে প্রথমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করি। কারা কর্তৃপক্ষের মতামতসহ আমরা সর্বশেষ গত ৮ মার্চ আবারও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাঁকে ডিভিশন না দেওয়ায় আমরা গত রোববার আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করি।’
বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন সাঈদী। ডিভিশনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তাঁর বয়স বর্তমানে ৭৯ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে আক্রান্ত। তাঁর হার্টের করোনারিতে পাঁচটি রিং পরানো রয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় তাঁর হার্টে তিনটি রিং পরানো হয়। তিনি আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। তাঁর হাঁটু ও কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা। বর্তমানে অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি উঠতে-বসতে ও চলাফেরা করতে দারুণ কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন। ইদানীং তিনি বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন।’
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। পরে আপিলের রায় রিভিউ চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ ও সাঈদী পৃথক আবেদন করেন। ২০১৭ সালের ১৫ মে রিভিউর রায়ে সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ড বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এর আগে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেপ্তার হন তিনি।