আমাদের শিকল ভাঙার গান
জোডিয়াক (XODIAC) সব সময় চেষ্টা করে ঐতিহাসিক গানগুলোকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য। ‘ওরা আমার মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়’ গানটির পুনঃসংগীতায়োজনের সাফল্যের পর, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’ গানটির মৌলিকত্ব বজায় রেখে নতুনভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে জোডিয়াক, আমাদের গানের দল।
কারাগারে থেকেই বিদ্রোহী কবি নজরুল ডাক দিয়েছিলেন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট ভেঙে ফেল কররে লোপাট রক্তজমাট শিকল পূজোর পাষাণবেদী ওরে ও তরুণ ঈশান, বাজা তোর প্রলয়বিষাণ- ধ্বংস নিশান উড়ুক প্রাচীর প্রাচীর ভেদী’। আমাদের গানের দল জোডিয়াক প্রথম এই গানটি পারফর্ম করেছিল এক বিজয়ের রাতে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ২০১৩ সালের বিজয় দিবসের রাত। অজস্র শিক্ষার্থী, মানুষের করতালি আর চিৎকারে বুঝেছিলাম, আমাদের পরিশ্রম বৃথা যায়নি। তারপর, আরো অনেক সময়ই আমরা এই গানটা করেছি। কয়েকদিন আগে ফাইনাল একটা রেকর্ডিংও করে ফেললাম।
আমাদের ব্যান্ডের সবাই গান গাওয়ার পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনে যে যার কাজে ব্যস্ত। গান আমরা মনের টান থেকেই করি, তাতে সঙ্গতভাবেই পেশাগত কোনো হিসাব নেই বললেই চলে। তপু হলো আমাদের গায়ক, আরিফ আর অনু গিটার বাজায়, বেজ বাজায় পুলক আর আমি হলাম ড্রামার। এই গানটা আমাদের কাছে সব সময়েই অন্যকিছু। আমি জানি না বা আমরা কেউই সম্ভবত মনে করতে পারব না যে এ গানটা আমরা কতবার করেছি। কিন্তু প্রতিবার এই গানটা করার সময় আমার মনে হয়, আমার জন্ম কেবল এই গানটা করার জন্যই হয়েছে। আমি নিশ্চিত, আমার আর বন্ধুদেরও ক্ষেত্রেও একই কথা খাটবে!
নজরুলের গান এ দেশের অজস্র মানুষের মতো আমাদের কাছেও অন্যায়কে রুখে দেওয়ার, অত্যাচারীর নিপীড়নের শেকল ভেঙে ফেলার মন্ত্র। এ দেশের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করে তাদের মানসে। তাদের কখনোই কারাগারের অন্ধকারের আড়ালে আটকে রাখা যাবে না। আমরা শিকল ভাঙবই ভাঙব!