‘শেষ দেখা’ করতে কারাগারে কামারুজ্জামানের পরিবার
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের সঙ্গে ‘শেষবারের’ মতো দেখা করতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। আজ শনিবার বিকেল ৪টা ০৫ মিনিটে পরিবারের সদস্যরা কারাগারে প্রবেশ করেন।
বিকেলে পরিবারের মোট ২১ জন সদস্য কারাগারে প্রবেশ করেছেন। এর মধ্যে রয়েছেন কামারুজ্জামানের স্ত্রী নুরুন্নাহার, বড়ভাই, বড়ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামি, ছোটছেলে হাসান ইমাম ওয়াফি, মেয়ে আতিয়া নূর।
কামারুজ্জামানের পরিবারের সদস্যদের কাছে থাকা অনুমতিপত্র পরীক্ষা করে কারাগারে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তাঁরা ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা কারাগারের ভেতরে অবস্থান করতে পারবেন বলে কারাগার সূত্র জানিয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে কামারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করতে তাঁর পরিবারকে চিঠি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। সেখানে বিকেল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে তাঁদের কারাগারে যেতে বলা হয়। কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল এনটিভি অনলাইনকে এ কথা জানান।
এর আগে আজ দুপুর ২টা ৪১ মিনিটে মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী আদেশ ঢাকা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছেছে। সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী ও ডেপুটি জেল সুপার লাভলু নির্বাহী আদেশটি গ্রহণ করেন। পরে আদেশটি কামারুজ্জামানকে আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ে শোনানো হয়।
গত ৬ এপ্রিল সকাল ৯টা ৫ মিনিটে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কামারুজ্জামানের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ করে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ গত বছরের ৩ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। চলতি বছর গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা কারাগারে পৌঁছায়। ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় কামারুজ্জামানের পক্ষে রিভিউ আবেদন করা হয়।
২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুটিতে মৃত্যুদণ্ড, দুটিতে যাবজ্জীবন ও একটিতে ১০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।