কিছু অতিরিক্ত জমি পাবে বাংলাদেশ : প্রধানমন্ত্রী
ভারতের রাজ্যসভায় বাংলাদেশ ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তি বিল পাস হওয়ার ফলে ভারতের কাছ থেকে কিছু অতিরিক্ত জমি পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অর্জনকে বর্তমান সরকারের বড় কূটনৈতিক সাফল্য বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘দেশ নিয়ে গেল, দেশ বেচে গেল, অমুক করল তমুক করল। কিন্তু দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রকৃত যে পদক্ষেপগুলো সেইগুলো কেউ নেয়নি। আবার আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসল তখন আওয়ামী লীগই প্রথম উদ্যোগ নিল ৯৬ সাল থেকে। আবার ৯৬ সাল থেকে যতটুকু কাজ আমরা করে রেখে গেছিলাম পরবর্তী সময়ে আবার যখন ২০০১ সালে বিএনপি এলো আবার তারা চুপচাপ। না সমুদ্র সীমা নিয়ে কোনো কথা বলেছে, না ল্যান্ড বাউন্ডারি নিয়ে কথা বলেছে। ২০০৯ সালে আসার পর আমরা দুটো সমস্যাই কিন্তু সমাধান করলাম এবং আজকে ভারতের রাজ্যসভায় এটা পাস হয়ে গেছে এখন লোকসভায় এটা যাবে। আপনারা শুনেছেন সেটা একেবারে অ্যানানিমাস। কেউ আপত্তি করেনি।এটাই হচ্ছে আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় একটা কূটনৈতিক সাফল্য বলে আমরা মনে করি।’
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকের শুরুতেই চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের সহিংস পরিস্থিতি থেকে দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার জন্য তাদের ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা।
দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা তা ধরে রাখার জন্য আহ্বান জানান। একইসাথে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, নারী ও শিশু পাচার রোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখার তাগিদ দেন তিনি। ভূমিকম্পে নেপালের পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশেও ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। এ ব্যাপারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে আরো আধুনিক করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। জনগণের কল্যাণে বর্তমান সরকার তার সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক নেতা এভাবে মানুষকে পুড়িয়ে মারতে পারে- এটা কল্পনারও অতীত। কাজেই বিষয়টা খুব কঠোরভাবে দেখতে হবে। যারা এ ধরনের অপরাধের সাথে জড়িত তাদের কোনো ক্ষমা নেই। তাদের শাস্তি পেতেই হবে। কারণ শাস্তি না দিতে পারলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।’
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধারাবাহিকভাবে মন্ত্রণালয়গুলো পরিদর্শন শুরু করেন। আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির দ্বিতীয় দফা শুরু হলো।
গতকাল বুধবার ভাতের উচ্চকক্ষ পার্লামেন্ট রাজ্যসভায় সীমান্ত বিলটি পেশ করেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। উত্থাপনের পর রাজ্যসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটি বিলটি নিয়ে আলোচনার জন্য তিন ঘণ্টা সময় নেয়। পরে ১৮১ জন সদস্যের সবাই বিলটির পক্ষে ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির অনুমতির জন্য পাঠান।
এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আজ বিলটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ভারতের নিম্নকক্ষ পার্লামেন্ট লোকসভায় উত্থাপন করা হবে। আর এর মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত সমাধান হতে যাচ্ছে দুই প্রতিবেশী দেশের দীর্ঘ চার দশকের অমীমাংসিত সীমান্ত সমস্যা। শিগগিরই চূড়ান্ত ছিটমহল বিনিময় কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করবে দুই দেশ।