গাজীপুরে গ্রেপ্তার ‘পাকিস্তানি গোয়েন্দা’ তিন দিনের রিমান্ডে
গাজীপুরে গ্রেপ্তার করা ‘পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই সদস্য’ খালিদ মেহমুদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের পুলিশি হেফাজতে (রিমান্ড) দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এলিনা আক্তার এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
গাজীপুর সদর থানার পরিদর্শক ইন্সপেক্টর মো. রবিউল ইসলাম জানান, পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য খালিদ মেহমুদকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল। তবে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
গত রবিবার রাতে গাজীপুরের শ্রীপুরের ভাঙনাহাটি এলাকার ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানা থেকে পাকিস্তানের নাগরিক খালিদ মেহমুদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
খালিদ মেহমুদকে গ্রেপ্তারের পরের দিন গত সোমবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, খালিদ পাকিস্তানের ফয়সলাবাদ মিল্লাত টাউনের ২৬০/বি-এর বাসিন্দা মো. আরশেদের ছেলে।
তাঁর পাকিস্তানি নাগরিকত্ব আইডি নং-৬১১০১-১৭৬৭৭২৪-৩, পাসপোর্ট নং-ইএফ ০১৫৭২৪২। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরের ভাঙনাহাটি এলাকার ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় গত বছরের ১৯ নভেম্বর থেকে ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করে আসছিলেন। তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে ৬ মে তারিখে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার আরো জানান, ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর থেকে তিন মাস মেয়াদি ‘ই’ টাইপ ভিসা নিয়ে খালিদ বাংলাদেশে আসেন। এরপর তিনি পরিচয় গোপন করে শ্রীপুরের ভাঙনাহাটি এলাকার ইউনিলায়েন্স টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানায় চাকরি নেন। চলতি বছর ৬ ফেব্রুয়ারি তাঁর ভিসার মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় বাড়ানো হয়। চলতি মাসের ৬ মে তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি অবৈধভাবে এ দেশে অবস্থান করছিলেন।
হারুন অর রশিদ বলেন, গাজীপুরে খালিদ মেহমুদের অবস্থানের খবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ হেড কোয়ার্টার ও গোয়েন্দা সংস্থা অবগত ছিল। কিন্তু তিনি ঠিক কোথায় অবস্থান করছিলেন তা আগে থেকে জানা যায়নি। তাই তাঁকে খোঁজা হচ্ছিল। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁকে ওই কারখানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গাজীপুরে অবস্থান করে আইএসআইয়ের এজেন্ট হিসেবে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে খালিদ মেহমুদের বিরুদ্ধে গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও স্বর্ণ চোরাচালানসহ বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে বলে দাবি করেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ। তিনি আরো জানান, খালিদ মেহমুদ আগে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কর্মরত থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বেইজ স্থাপনা ও রাডার টেকনোলজির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ২০০১ সালে বিমান বাহিনী থেকে অবসরে যান। এরপর তিনি পাকিস্তানের আইএসআইর সক্রিয় সদস্য হয়ে কাজ করেন।