অর্থমন্ত্রী ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন : বিএনপি
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘নেতিবাচক’ মন্তব্য করায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কঠোর সমালোচনা করেছে বিএনপি। দলটির পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে ‘সাবেক স্বৈরাচারের সহযোগী’ আখ্যায়িত করে মন্ত্রিত্বের ‘দাপটে’ তিনি এখন ‘ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন’ বলেও সমালোচনা করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘খালেদা জিয়ার রাজনীতি শেষ (ফিনিশড), অফিশিয়ালি তিনি এখন আর কেউ নন।’ আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাব দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সমালোচনা করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘এমন কথা একজন সাবেক স্বৈরাচারের সহযোগীর পক্ষেই মানানসই। জেনারেল এরশাদের সামরিক শাসন জারির পরপরই মুহিত সাহেব দুই বছর তাঁর অর্থমন্ত্রিত্ব ভোগের সময় ভেবেছিলেন, রাজনীতি করা শেষ। ১৯৮৮-৯০ সালে এরশাদ যখন প্রধান দলগুলোর বয়কটে পাতানো ইলেকশন করেন, হয়তো তখনো ভেবেছিলেন খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনার রাজনীতিও শেষ। বাস্তবিকই কি তা হয়েছিল? দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলের প্রধান, তিন তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার শীর্ষে যাঁর অবস্থান তাঁকে এবং তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে মাল মুহিতের এ ধরনের রাবিশ বক্তব্য কেবল কোনো অর্বাচীন বালকের মুখেই মানায়।’
‘রাবিশ’ ও ‘বোগাস’খ্যাত মুহিত সাহেব ‘ভারসাম্যহীন কথাবার্তার জন্য’ নিজ দলেও বহুবার নিন্দিত-সমালোচিত হয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক বলেন, ‘বিনা ভোটে এমপি-বোনাসে মন্ত্রিত্ব বহাল থাকায় মুহিত সাহেব ধরাকে সরা জ্ঞান করছেন। অবশ্য তিনি মাঝেমধ্যে সত্যও বলে ফেলেন নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে। আজ যে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারের বেহাল দশা, তাতে তাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি। তাঁর ব্যর্থতা-নির্লিপ্ততায় হলমার্ক কেলেঙ্কারি, বেসিক ব্যাংক-সোনালী ব্যাংকে যে লুটপাট হয়েছে তার জন্য তিনি বহুলাংশেই দায়ী। এই লুটেরাদের ডাকাত বলতে দ্বিধা করেননি, তবে তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি বোধগম্য কারণেই।’
এ সময় ‘বিনা ভোটের সংসদে অবাস্তবায়নযোগ্য বিশাল আকারের’ বাজেটের কোনো জবাবদিহিতা নেই উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘দেশে সুশাসন এখন শূন্যের কোটায়। ভাগাভাগির সংসদে বিএনপি নেই। কারণ বিএনপি ভাগাভাগির রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না।’
‘বিএনপি কেবল অবাধ নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধি বাছাই করার ক্ষমতায় দেশ পরিচালনার নীতিতে বিশ্বাসী। বর্তমান সংসদে কোনো বিরোধী দল নেই। তথাকথিত বিরোধী দল সরকারের অংশ হওয়ায় আজ জনগণের পক্ষে কথা বলা হয় না এ সংসদে। বিএনপি একটি দায়িত্বশীল বিরোধী দল হওয়ার কারণে জনগণের পক্ষে কথা বলতেই হয়।’ বলেন বিএনপির মুখপাত্র।