বিয়ের বয়স কমানোর প্রস্তাব বাতিলের আহ্বান এইচআরডব্লিউর
মেয়েদের বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স কমিয়ে ১৮ থেকে ১৬ করার প্রস্তাব বাতিল করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটির মতে, মেয়েদের বিয়ের বয়স কমানো হলে তা হবে বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের পরিপন্থী। আজ মঙ্গলবার সংস্থাটির পক্ষ থেকে এসব আহ্বান জানানো হয়।
এইচআরডব্লিউ একই সঙ্গে ব্যাপক হারে বাল্যবিবাহ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ব্যাপক হারে বাল্যবিবাহ ঘটে।
এর আগে গত বছর লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাল্যবিবাহ বিষয়ক বৈশ্বিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অঙ্গীকার করেছিলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ১৫ বছরের নিচে মেয়েদের বিবাহ বন্ধ করা হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে সব ধরনের বাল্যবিবাহ বন্ধ হবে।
এইচআরডব্লিউর মতে, মেয়েদের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার প্রস্তাব শেখ হাসিনার অঙ্গীকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। বাংলাদেশে নেওয়া প্রকৃত প্রস্তাবটি হলো, মেয়েদের বিয়ের প্রকৃত বয়স ১৮ থাকবে, তবে পরিবারের অভিভাবকদের সম্মতিতে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। বাংলাদেশে অধিকাংশ বিয়ে পরিবারের অভিভাবকদের মাধ্যমেই ঘটে থাকে।
এইচআরডব্লিউর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বাল্যবিবাহের উচ্চ হারের দেশগুলোর অন্যতম একটি বাংলাদেশ। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হয়। শতকরা ৩০ ভাগ মেয়ের ১৫তম জন্মদিনের আগেই বিয়ে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরো কম বয়সে বিয়ে হয়।
বাংলাদেশে বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ হলেও আইন অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয় না। আর অনেক ক্ষেত্রে সামান্য ঘুষ দিয়েই জন্মনিবন্ধনের বয়স বাড়িয়ে নেওয়া যায়।
এইচআরডব্লিউর মতে, ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে বাল্যবিবাহের অন্যতম কারণ বারবার বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। সংস্থাটি জানায়, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙনের কারণে দারিদ্র্যের শিকার হয়ে অনেক পরিবার মেয়েদের বাল্যবিবাহ দেয়।
এইচআরডব্লিউর নারী অধিকার গবেষক হিদার বার বলেন, বাল্যবিবাহ বাংলাদেশে মহামারীর আকার ধারণ করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। তিনি বলেন, আরেকটি প্রজন্ম হারিয়ে যাওয়ার আগেই সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, এইচআরডব্লিউএর আহ্বান ও বক্তব্যের ব্যাপারে সোমবার বাংলাদেশের সরকারের নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।