বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার পেলেন ফজলে হাসান আবেদ
বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার-২০১৫ পেয়েছেন। ওয়াশিংটনের স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দপ্তরে কৃষিমন্ত্রী টম ভিলস্যাক এ পুরস্কারের ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ গ্রামীণ উন্নয়ন কমিটি বা ব্র্যাক প্রারম্ভিক অবস্থায় ১৯৭০ সালে জলোচ্ছ্বাসে আক্রান্ত মানুষের সহায়তার উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিক্ষা, দারিদ্র্য ইত্যাদি জনহিতৈষী কাজে মনোনিবেশ করে অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি। আফ্রিকা ও এশিয়া মহাদেশে প্রায় ১৫ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূর করতে সহায়তা করেছে ব্র্যাক।
২০১০ সালে ব্রিটেনের নাইটহুড উপাধি পাওয়া স্যার ফজলে হাসান আবেদ (৭৯) বাংলাদেশ থেকে বার্তা সংস্থা এপিকে বলেছেন, ‘দারিদ্র্য একটি বহুমাত্রিক ব্যাপার, এটা কেবল আয় বা কাজের অভাবে হয় না। সুযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা বা এ রকম অনেক কিছুর অভাবে দারিদ্র্য হতে পারে।’
১৯৮৬ সালে নোবেলজয়ী নরম্যান বর্লুগ বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার চালু করেন। যাঁরা খাদ্যের মান উন্নত ও এটা সহজলভ্য করেছেন, তাঁদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। এর অর্থমূল্য দুই লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার (এক কোটি ৯৫ লাখ টাকা)।
বিশ্ব খাদ্য পুরস্কারের প্রেসিডেন্ট কেনেথ কুইন বলেন, আবেদ সফলভাবে ব্র্যাককে আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংগঠনে রূপান্তরিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘যা তাঁকে সবার থেকে আলাদা করেছে তা হলো, অত্যন্ত কঠিন পরিবেশে পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ ও কারো মতে কার্যকর সংগঠনটি গড়ে তুলেছেন এবং বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যেতে এর রয়েছে লক্ষাধিক কর্মী। খাদ্য অনিরাপত্তা ও দারিদ্র্য থেকে বের হয়ে আসার কঠিন পথের মুখে থাকা অতিদরিদ্রদের কাছে পৌঁছানোর ব্যাপারে জোর দেয় সংগঠনটি।’
মার্কিন কৃষিমন্ত্রী ভিলস্যাক বলেন, ‘স্যার ফজলে ও তাঁর সংগঠন—যা নারীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কৃষি ও গণিতে অন্তর্ভুক্ত করে—এ জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হলো। আমাদের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপকার করার এই দৃষ্টিভঙ্গি, কৃষি মন্ত্রণালয় এটা লালন করে।’
ব্র্যাকের হিসাবে ১০০ কোটির বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, যাদের দৈনিক আয় ১ দশমিক ২৫ মার্কিন ডলারের কম। এবং চরম দারিদ্র্যের নিচে বাস করে আরো লাখ লাখ মানুষ, যাদের আয় অর্ধেক ডলারের কম।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) জানিয়েছে, ১৯৯১-৯২ সময়ে বাংলাদেশ দারিদ্র্য ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, ২০১০ সালে এটা কমে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।
আগামী অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ডে মইন শহরে পুরস্কারটি স্যার ফজলে হাসান আবেদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।