ফের পেছাল নূর হোসেনের শুনানি
বিচারক না থাকায় ফের পিছিয়ে গেল বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের সাত খুনে অভিযুক্ত নূর হোসেনের শুনানি। এর মধ্য দিয়ে নূর হোসেনকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া আরো দীর্ঘায়িত হলো বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আজ শনিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত আদালতে নূর হোসেনকে হাজির করা হয়। কিন্তু বিচারক না থাকায় এ মামলার শুনানি হয়নি। পরে আদালত শুনানির জন্য আগামী ১৬ অক্টোবর দিন দিয়েছেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার পিছিয়ে গেল এ মামলার শুনানি।
নূর হোসেনের আইনজীবী অনুপ ঘোষ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘শনিবার বিধাননগরে ভোট থাকায় দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে অনেক আসামি আদালতে হাজির না হলেও নূর হোসেনকে এদিন যথাসময়ে বারাসাত আদালতে হাজির করা হয়। কিন্তু এদিন বিচারক সঞ্জীব চক্রবর্তী না থাকায় মামলার পরবর্তী দিন ১৪ দিন পিছিয়ে ধার্য করা হয় আগামী ১৬ অক্টোবর।’
ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে সরকার নূর হোসেনসহ খান সুমন ও ওহিদুজ্জামান শামিমের বিরুদ্ধে মামলা করে। সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য গত ২৪ আগস্ট বারাসাত আদালতের শরণাপন্ন হয় সরকারপক্ষ। আইনজীবী অনুপ ঘোষ খান সুমন ও ওহিদুজ্জামানের পক্ষেও লড়ছেন।
এর আগে সরকারপক্ষের আইনজীবী শান্তময় বসু জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রের সবুজ সংকেতে রাজ্য সরকার ৩২১ ধারায় একটি পিটিশন দাখিল করে নূর হোসেনের বিরুদ্ধে যাবতীয় মামলা প্রত্যাহার করে নিতে চায়। যে কারণে তাঁরা আদালতের কাছে ওই পিটিশন জমা করেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর আইনজীবী অনুপ ঘোষ জানিয়েছিলেন, সরকার নূর হোসেনের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের মামলা রুজু করেছিল। এখন তারা মামলা তুলে নিতে চাইছে। কী কারণে এই মামলা তুলে নেওয়া হবে এবং নূর হোসেনের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটা স্পষ্ট করার জন্যই আসামিদের পক্ষে শুনানির আবেদন করা হয়েছে।
অনুপ ঘোষ আরো জানান, ‘নূর হোসেন এরই মধ্যে এক বছরের ওপর জেল খেটেছেন। এ ক্ষেত্রে নূর হোসেনেরও কিছু বলার আছে। আদালত তাঁর বক্তব্য যাতে শোনেন সেই কারণেই আমরা একটা শুনানির আবেদন জানিয়েছি।’
এর আগে বারাসাতের জেলা জজ আদালত থেকে এই মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয় সিজেএম আদালতে।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে আরেকজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়েজামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা করেন।
এই ঘটনায় র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ জনকে আটক করে পুলিশ। হত্যার দায় স্বীকার করে র্যাবের ১৭ জনসহ ২২ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং ঘটনার সাক্ষী হিসেবে র্যাব সদস্যসহ ১৭ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
চলতি বছরের গত ৮ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশিদ মণ্ডল নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।